চট্টগ্রাম বিভাগের সকল জেলার ৫০টি দর্শনীয় স্থান

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগ অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, ঐতিহাসিক স্থাপনা, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এবং আধুনিক পর্যটন কেন্দ্রের জন্য দেশজুড়ে বিখ্যাত। এই বিভাগের ১১ টি জেলার প্রতিটিতেই রয়েছে বহু পর্যটন গন্তব্য। চট্টগ্রাম বিভাগের সকল জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য আকর্ষণীয় ৫০টি দর্শনীয় স্থান সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা। ভ্রমণ পিপাসুরা এখান থেকে বেছে নিতে পারেন দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে আপনার পছন্দের গন্তব্যটি।

কুমিল্লা জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

ময়নামতি জাদুঘর (Mainamati Museum)

ময়নামতি জাদুঘর কুমিল্লা শহর থেকে ১৪কিলোমিটার দূরে সালমানপুরে অবস্থিত। কুমিল্লার বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান খননকালে যেসকল মুল্যবান পুরাসামগ্রী খুঁজে পাওয়া গেছে, সেই প্রাচীন নিদর্শনগুলো সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের জন্য ১৯৬৫ সালে কুমিল্লা কোটবাড়ির শালবন বিহারের দক্ষিণ পাশে শালবনকে সামনে রেখে এই জাদুঘর স্থাপন করা হয়। ময়নামতি জাদুঘর ভবনে প্রত্মতাত্ত্বিক স্থান খননের পর পাওয়া প্রাচীন নিদর্শন গুলো প্রদর্শনের জন্য মোট ৪২টি আধার রয়েছে।

শালবন বৌদ্ধ বিহার (Shalban Buddhist Monastery)

শালবন বৌদ্ধ বিহার কুমিল্লা জেলার কোটবাড়িতে বার্ডের কাছে লালমাই পাহাড়ের মাঝামাঝি এলাকায় অবস্থিত। এর অবস্থানকৃত গ্রামের নাম শালবনপুর। শালবন বিহারে মোট ১১৫ টি কক্ষ আছে‌। বিহারটির ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের মাধ্যমে পাওয়া নিদর্শন গুলোর অধিকাংশই ময়নামতি জাদুঘরে প্রদর্শিত হয়।

রানী ময়নামতি প্রাসাদ (Place of Queen Mainamati)

রানী ময়নামতি প্রাসাদ দশম শতাব্দীতে চন্দ্র বংশীয় রাজা মানিক চন্দ্রের স্ত্রী ময়নামতির আরাম আয়েশের জন্য নির্মাণ করা হয়। বর্তমান, কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলায় অবস্থিত। ১৯৮৮ সালে সমতল ভূমি থেকে ৩ মিটার গভীরে প্রাপ্ত সুড়ঙ্গ পথের সামনে খননকালে এই প্রাসাদের সন্ধান পাওয়া যায়। স্থানীয়দের মতে, এটি একটি ক্রোশাকৃতির মন্দির ছিল, যা পরবর্তীতে সংস্কার করে ২য়, ৩য় ও ৪র্থ যুগে পূর্বমুখী ছোট আকৃতির মন্দির বানানো হয়।

ডাইনো পার্ক (Dino Park)

ডাইনোসর পার্ক কুমিল্লা জেলার কোটবাড়ির লালমাই পাহাড়ে নির্মিত বিলুপ্ত হওয়া ডাইনোসরদের চলাফেরার কাল্পনিক রাজ্য। প্রায় ১২ একর জায়গা নিয়ে নির্মিত ডাইনোসর পার্ক সকলের কাছে ডাইনো পার্ক নামে পরিচিত। এটি সমতল ভূমি থেকে প্রায় ৪৫ ফুট উঁচুতে অবস্থিত। আধুনিকভাবে গড়ে উঠা এই পার্কটি বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ডাইনোসর থিম পার্ক।

রূপবান মুড়া (Rupban Mura)

রূপবান মুড়া প্রাচীন ইতিহাসের, রহিম ও রূপবানের ভালোবাসার অন্যতম এক নিদর্শন। এটি কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে কোটবাড়িতে অবস্থিত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। ৯০ এর দশকে কুমিল্লা কালিবাজার সড়কের কাছে এই বিহারটি খনন করা হয়।

আনন্দ বিহার (Ananda Vihara)

আনন্দ বিহার বাংলাদেশের ময়নামতির অন্যান্য প্রাচীন স্থাপনা গুলোর মধ্যে একটি বৃহত্তম মন্দির ও উপমহাদেশের শেষ বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়। এটি কুমিল্লা জেলা সদরের কোটবাড়ির ময়নামতিতে অবস্থিত। বলা হয়, ৭ম শতাব্দীর শেষ দিকে বা ৮ম শতাব্দী শুরুর দিকে দেব রাজবংশীয় তৃতীয় শাসক শ্রী আনন্দ দেব এই আনন্দবিহার নির্মাণ করেন। ৭ম শতকের শেষের দিকে আনন্দ বিহার ছিল সমতটের রাজধানী।

চট্টগ্রাম জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত (Patenga Sea Beach)

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকতগুলোর মধ্যে একটি। এটি চট্টগ্রাম থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই সৈকতটি ৫ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এখানে কর্ণফুলী নদী ও সাগরের মোহনায় অবস্থিত পতেঙ্গায় সূর্যোদয় কিংবা সূর্যাস্তের দৃশ্য খুবই মনোরম। বর্তমানে এই সৈকতটিকে আধুনিক ও বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।

কোদালা চা বাগান, রাঙ্গুনিয়া (Kodala Tea Estate) 

চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া সদর উপজেলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে কোদালা ইউনিয়নে:কোদালা চা বাগান অবস্থিত। এটি ১৮৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং বাংলাদেশের প্রথম শীর্ষস্থানীয় চা বাগান। এখানে চা শ্রমিকদের কর্মতৎপরতা, ব্রিটিশ আমলের বাংলো এবং পাখির কিচিরমিচির শব্দ দর্শণার্থীদের মনে শিহরণ জাগায়।

বাঁশখালী ইকোপার্ক (Banskhali Eco Park)

বাঁশখালী ইকোপার্ক চট্টগ্রাম থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরে বাঁশখালী উপজেলায় অবস্থিত। ২০০৩ সালে জীববৈচিত্র রক্ষা, বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল উন্নয়ন এবং ইকো ট্যুরিজম ও চিত্তবিনোদনের উদ্দেশ্যে প্রায় এক হাজার হেক্টর বনভূমি নিয়ে সরকারি উদ্যোগে এই ইকোপার্কটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ, উঁচু-নিচু পাহাড়, লেকের স্বচ্ছ পানি ও বনাঞ্চল গিরে গড়ে উঠেছে। 

ভাটিয়ারী লেক (Bhatiary Lake)

ভাটিয়ারী লেক চট্টগ্রাম সিটি গেট থেকে মাত্র ২০ মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত। রুপবৈচিত্রে ভরপুর ভাটিয়ারী লেকের স্বচ্ছ পানি, ভাটিয়ারী সানসেট পয়েন্টে সূর্যাস্তের দৃশ্য, সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত গোল্ফ কোর্স এবং লেকের সাপের মতো আঁকাবাঁকা আকৃতি একে অপরূপ করে তুলেছে। 

সন্দ্বীপ (Sandwip)

এটি বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ পূর্ব উপকূলে চট্টগ্রাম জেলার মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত একটি দ্বীপ। এটি প্রায় ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ৫-১৫ কিলোমিটার প্রশস্ত। সবুজ মাঠ, নদীর বুকে জেগে উঠে চর এবং প্রায় ৪ লাখ সহজ-সরল জনবসতীর এই দ্বীপের ঐতিহ্যবাহী রূপ অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর।

বান্দরবান জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

নীলগিরি (Nilgiri)

বাংলার দার্জিলিং খ্যাত নীলগিরি বান্দরবান জেলা সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে ২২০০ ফুট উঁচু একটি অপরূপ পাহাড়। প্রায় ২২০০ ফুট উঁচুতে সেনাবাহিনী কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর পর্যটন কেন্দ্রগুলোর একটি নীলগিরি। পাহাড়ের চূড়া থেকে দেখা যায় বাংলার প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য।

নীলাচল (Nilachal)

নীলাচল বান্দরবান শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২,০০০ ফুট উচ্চতায় টাইগার পাড়ায় পাহাড়ের উপর অবস্থিত একটি পর্যটন কেন্দ্র। এখানে সকালে মেঘের ভেলার খেলা আর বিকেলের সূর্যাস্তসহ দিনব্যাপী পাহাড় আর মেঘের অপূর্ব মিতালী পর্যটকদের মুগ্ধ করে। এখান থেকে পুরো বান্দরবান শহর এবং মেঘমুক্ত আকাশ থাকলে কক্সবাজার সাগর পর্যন্ত দেখা যায়। 

বগালেক (Bogalake)

বগালেক বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলা থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে কেওক্রাডাম পাহাড়ের কোলে ঘেঁষে অবস্থিত একটি হ্রদ। এটি প্রায় ২,০০০ বছর আগে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২০০ ফুট উচ্চতায় প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট। অনেকের কাছে এটি ড্রাগন লেক নামেও পরিচিত।  

মিলনছড়ি (Milonchori)

বান্দরবান জেলা থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে পর্যটকদের জন্য অপরূপ মহিমাময় ও ব্যাপক জনপ্রিয় একটি ভ্রমণস্থান মিলনছড়ি। পাহাড়ি রাস্তা, দিগন্ত জোড়া সবুজ, সাঙ্গু নদীর মোহনীয় সৌন্দর্যের এক কাল্পনিক ও নান্দনিক রূপচিত্র এটি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও এখানে রয়েছে ১১ টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির বৈচিত্রময় বসবাস।

ডিম পাহাড় (Dim Pahar)

ডিম পাহাড় বান্দরবানের আলিকদম এবং থানচি থানার মাঝে অবস্থিত একটি পাহাড়। আলিকদম-থানচি সড়ক বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু সড়ক হিসেবে পরিচিত। প্রায় ২৫০০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত ৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কের পথেই অবস্থিত অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ডিম পাহাড়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

আবি রিভার পার্ক (Abi River Park)

আবি রিভার পার্ক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের দক্ষিণ প্রান্তে ভাদুগরে কুড়ুলিয়া খালের তীরে অবস্থিত একটি আকর্ষণীয় বিনোদন পার্ক। এটি প্রায় ৪৮০ শতক জায়গা জুড়ে সজ্জিত একটি নান্দনিক পার্ক, যা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে দর্শনার্থীদের জন্য প্রধান আকর্ষণ অ্যান্ডারসন খালের তীরে নির্মিত হাঙ্গর আকৃতির নৌকা ঘাটে। এছাড়াও পার্কের অন্যান্য রাইড রয়েছে।

ধরন্তি হাওর (Dharanti Haor)

ধরন্তি হাওর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধারণকারী জলাভূমি। এই হাওরের পূর্ব দিকে রয়েছে তিতাস নদী এবং পশ্চিমে মেঘনা নদীসহ ছোট-বড় বেশ কয়েকটি খাল বিল। এই হাওরের উপর দিয়ে চলে গেছে নাসিরনগর-সরাইল সড়ক। বৈশাখ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত এই হাওরটি অথৈ জলে ভরে থাকে। এখানে অপূর্ব সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখে, অনেকেই একে মিনি কক্সবাজার বলে।

হরিপুর জমিদার বাড়ি (Haripur zamindar house)

হরিপুর জমিদার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হরিণবেড় গ্রামে অবস্থিত। ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি প্রায় ৫ একর জমির উপর তৈরি করা হয়েছে। এটি লাল ইট সুরকির গাঁথুনি দিয়ে নান্দনিক ভাবে তৈরি করা হয়েছে। এখানে মোট ৬০টি কক্ষ রয়েছে। ঐতিহাসিকদের তথ্য মতে, আনুমানিক ১৭৫ বছর পূর্বে জমিদার গৌরী প্রাসাদ রায়চৌধুরী ও কৃষ্ণপ্রসাদ রায়চৌধুরী হরিপুর জমিদার বাড়ি নির্মাণ করেছিলেন।

কুল্লাপাথর শহীদ স্মৃতিসৌধ (Kalapathar Shahid Sriti Shoudho)

কুল্লাপাথর শহীদ স্মৃতিসৌধ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সমাধিস্থল। এটি একটি ছোট টিলার উপরে অবস্থিত। সীমান্তবর্তী উপজেলা কসবা মুক্তিযুদ্ধের সময় ২ নম্বর সেক্টরের আওতায় ছিল। এখানে দুজন বীরবিক্রম, একজন বীরউত্তম, দুজন বীরপ্রতীক সহ মোট ৪৮ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সমাধি রয়েছে। 

রাঙ্গামাটি জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

সাজেক ভ্যালি (Sajek Valley)

সাজেক উপত্যকা বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা থেকে প্রায় ১৮০০ ফিট উঁচু সাজেক ভ্রমণ এর কেন্দ্রস্থল। পাহাড়ের উচ্চতা থেকে আশেপাশের অন্যান্য পাহাড়, ঘন বান দ্বারা বেষ্টিত সবুজের সমারোহ, আকাশের মেঘের নিবিড় ভাবে ঘুরে বেড়ানো সবমিলিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সেরা একটি স্থান সাজেক ভ্যালি। বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য ও দর্শনীয় স্থান হিসেবে সাজেক ভ্যালি পরিচিত।

কাপ্তাই লেক (kaptai lake)

কাপ্তাই লেক বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের রাঙ্গামাটি জেলার একটি কৃত্রিম হ্রদ। ১৯৫৬ সালে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য কর্ণফুলী নদীর উপর কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে এই বাঁধ নির্মাণের ফলে রাঙ্গামাটি জেলার ৫৪ হাজার একর কৃষি জমি পানিতে ডুবে যায় এবং এই হ্রদের সৃষ্টি হয়। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আয়তনে সর্ববৃহৎ এই কৃত্রিম হ্রদটি। এখানে একদিকে যেমন রয়েছে লেকের অথৈ জলের মধ্যে বহু প্রজাতির মাছ ও অনেক জীববৈচিত্র্য, তেমনি পাহাড়ে রয়েছে বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীর সম্ভার।

রংরাঙ (RongRang)

রংরাঙ রাঙ্গামাটি জেলায় মোহনীয় কর্ণফুলী নদীর কোলঘেঁষে জেগে উঠা একটি পাহাড়। এটি কর্ণফুলী নদীর পাশে বরকল ও জোড়াছড়ি উপজেলায় অবস্থিত। রাঙ্গামাটি ভ্রমণে অপরূপ সৌন্দর্যের এই পাহাড়টিতে না উঠলে যেন বাকি থেকে যাবে অনেক কিছুই পরখ করা। 

আরো পড়ুন: হাঁসের মাংস রান্নার জনপ্রিয় ও সুস্বাদু ৫ টি রেসিপি

রাইখং লেক (Raikhiyang Lake)

রাইখং লেক রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলী ইউনিয়নে অবস্থিত একটি গভীর প্রাকৃতিক হ্রদ। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২,৫০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত। এই লেক এর আয়তন প্রায় ৩০ একর। বহুকাল ধরে লেকের পাশে বসতি স্থাপন করেছে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর। রাঙ্গামাটি ভ্রমণের অন্যতম আকর্ষণ হতে পারে এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত লেকটি।

নোয়াখালী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

নিঝুম দ্বীপ (Nijhum Swipe)

নিঝুম দ্বীপ নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলায় অবস্থিত বঙ্গোপসাগরের একটি ছোট দ্বীপ। এর আই ডোন্ট প্রায় ১৪,০৫০ একর। এটি চর ওসমান, চড় মুরি, কামলার চর, বল্লার চর নামের মোট চারটি দ্বীপ ও কয়েকটি চরের সমন্বয়ে গঠিত একটি দ্বীপ। শীতকালে এখানে হাজারো অতিথি পাখিদের আগমন হয়। এছাড়াও এখানে রয়েছে প্রায় ৪০,০০০ হরিণ, নানা রকমের সাপ, শিয়াল, বন্য শুকর, বানর ইত্যাদি।

বজরা শাহী মসজিদ (Bajra Shahi Mosque)

বজরা শাহী মসজিদ নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার বজরা ইউনিয়নে নির্মিত একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। আনুমানিক, ১৭৪১-১৭৪২ সালে জমিদার আমানুল্লাহ ৩০ একর আয়তনের জমিতে একটি বিশাল দিঘী খনন করে দিঘির পশ্চিম প্রান্তে এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। দিল্লির শাহী জামে মসজিদের নকশার আদলে এই নয়নাভিরাম বজরা শাহী মসজিদ নির্মিত হয়েছে। 

নোয়াখালী ড্রিম ওয়ার্ল্ড পার্ক (Noakhali Dream World Park)

নোয়াখালী ড্রিম ওয়ার্ল্ড পার্ক নোয়াখালী জেলার ধর্মপুর গ্রামে প্রায় ২৫ একর জায়গা জুড়ে গড়ে তোলা একটি নান্দনিক পার্ক। নোয়াখালীর সর্ববৃহৎ এই বিনোদন কেন্দ্রটি সকল বয়সের দর্শনার্থীদের জন্য সম্পূর্ণ বেসরকারী উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে আছে বিভিন্ন প্রকার রাইড, ঝর্না, সুইমিং পুল, লেক, সবুজের ঢাকা পাহাড়, পিকনিক স্পট ইত্যাদি।

মুছাপুর ক্লোজার (Muchapur Closer)

মুছাপুর ক্লোজার নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ সীমানা বঙ্গোপসাগরের একপ্রান্তে অবস্থিত। এখানে সবুজ প্রকৃতি, বন্যপ্রাণী ও পাখির ঝাক, বাগান, ফেনী নদীর মাঝে ক্লোজার, ২৩ ভেন্ট রেগুলেটর, জেলেদের উচ্ছ্বাস আর সাগরের বিস্তীর্ণ জলরাশি মিলে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের জগত গড়ে তুলেছে।

কক্সবাজার জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

কক্সবাজার জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ
কক্সবাজার জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

হিমছড়ি (Himachari)

পাহাড়ের কোল ঘেষা সমুদ্র সৈকত হিমছড়ি। এটি কক্সবাজারের মূল সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। এর পাহাড়ে উঠলে চোখের সামনে ভেসে উঠে নীল দিগন্ত। হিমছড়িতে রয়েছে হিমশীতল আকর্ষণীয় ঝর্ণা। পাহাড়ের উপরেও রয়েছে একটি ছোট পর্যটন কেন্দ্র। হিমছড়ির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো- ‘মেরিন ড্রাইভ’। 

ইনানী বিচ (Inani Beach)

কক্সবাজারের হিমছড়ি থেকে ৫ কিলোমিটার ভেতরে রয়েছে প্রবাল পাথরের সমুদ্র সৈকত ইনানী বিচ। প্রবাল পাথরের প্রতিটির আকৃতি ভিন্ন এবং বেশ প্রাচীন সেই পাথর। ইনানী বিচের দুপাশের পাহাড় ও সমুদ্রের ঢেউ দেয় মন মাতানো আনন্দ। পাথরের গা জুড়ে লেগে থাকে ধারালো শামুক ঝিনুক। সব মিলিয়ে প্রকৃতির নয়নাভিরাম দৃশ্য।

সেন্টমার্টিন দ্বীপ (Saint Martin Island)

কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলা থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত সেন্টমার্টিন দ্বীপ। এটি বাংলাদেশের এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবাল দ্বীপ। একে দারুচিনি দ্বীপও বলা হয়। সেন্ট মার্টিনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে রয়েছে স্নোরকেলিং, স্কুবা ডাইভিং এর মতো অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ। রাতে সেন্ট মার্টিনের দ্বীপে চলাফেরায় উপভোগ করতে পারবেন পৃথিবীর আসল সৌন্দর্য।

কুদুম গুহা (Kudum Cave)

কুদুম গুহা কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় অবস্থিত একটি প্রাচীন গুহা। এটি বাংলাদেশের একমাত্র বালু-মাটির গুহা। এই গুহার দৈর্ঘ্য প্রায় ৫০০ ফুট এবং প্রবেশপথের মুখ প্রায় ১২ ফুট। গুহার ভিতরে দেখা যায় ঠান্ডা হিমশীতল পানি, বিভিন্ন প্রকার শামুক, জোক, মাকড়সা, বাদুর ইত্যাদি প্রাণী এবং অনেক ধরনের মাছ।

রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড (Radiant Fish World)

এটি কক্সবাজারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য না হলেও মানুষের তৈরি একটি আকর্ষণীয় ফিস মিউজিয়াম ও একুরিয়াম। এটি কক্সবাজারের মূল শহরের ঝাউতলায় অবস্থিত। এখানে রয়েছে সাগর ও মিঠা পানির মাছ সহ প্রায় ১০০ প্রজাতির মাছ। কিছু ভিন্ন ধর্মী মাছ ও এখানে পাওয়া যায়। যেমন- পিরানহা, শাপলাপাতা, কাছিম, সামুদ্রিক শৈল, পিতম্বরি, সাগর কুচিয়া, জেলিফিশ, হাঙ্গর ইত্যাদি মাছ। 

রামু রাবার বাগান (Ramu Rubber Plantation)

১৯৬০ সালে দেশে অনাবাদি জমি জরিপ করে রামুতে রাবার চাষাবাদ শুরু করা হয়, যা বর্তমানে রামুর ঐতিহ্যবাহী রাবার বাগান হিসেবে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। এটি প্রায় ২,৬৮২ একর জমি জুড়ে বিস্তৃত। পাহাড় ও সমতলের অপূর্ব সৌন্দর্যের স্থান হিসেবে ও সারি সারি গাছের মেলায় অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দর রামুর রাবার বাগান। প্রতিবছর এখান থেকে প্রায় আড়াই লাখ কেজি রাবার উৎপাদন করা হয়।

খাগড়াছড়ি জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

হাতিমাথা (HathiMatha)

হাতে মাথা খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার পেরাছাড়া ইউনিয়নের একটি পাহাড়ি পথ। স্থানীয়দের মাঝে এটি মায়ুং কপাল, এদো সিরে মোন, স্বর্গের সিঁড়ি নামেও পরিচিত। এই পাহাড়ের দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে স্থানীয় ১৫ টি গ্রামের বাসিন্দারা চলাচল করে। পাহাড়ের চলাফেরার জন্য ৩০৮ ফুট লম্বা লোহার সিঁড়ি তৈরি করা হয়েছে।

নিউজিল্যান্ড পাড়া (New Zealand Para)

নিউজিল্যান্ড পাড়া খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে মাত্র ১.৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পানখাইয়া পাড়া ও পেরাছড়ার কিছু অংশ নিউজিল্যান্ডের মতো দেখতে হওয়ায় স্থানীয়রা একে নিউজিল্যান্ড পাড়া বলে। এখানে সবুজ শস্যক্ষেতের সমতল ভূমি ও পাহাড়ের সমন্বয় তৈরি হয়েছে অসাধারণ প্রাকৃতিক ল্যান্ডস্কেপ।

মানিকছড়ি মং রাজবাড়ী (Manikchari Mong Rajbari)

মানিকছড়ি মং রাজবাড়ী খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে ছত্রিশ কিলোমিটার দক্ষিন-পশ্চিমে অবস্থিত প্রাচীন মং রাজার আদি নিবাস। ১৭৯৬ সালে রাজা কংজয় ত্রিপুরা রাজবংশের রাজকন্যাকে বিয়ে করে ৫০০ ত্রিপুরা পরিবারকে সাথে নিয়ে সীতাকুন্ড থেকে মানিকছড়িতে এসে এই রাজবাড়ী স্থাপন করেছিলেন।

মায়াবিনী লেক (Mayabini Twisa Lake)

মায়াবিনী লেক খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার ভাইবোনছড়ার কংচাইরি পাড়ায় পাহাড়ের মাঝে অবস্থিত একটি অপরূপ লেক। পাহাড়ের উঁচু-নিচু ৪০ একর জায়গা জুড়ে এই অরণ্য ঘেরা সবুজের সমারোহ লেকটি অবস্থিত। লেকের মাঝে থাকা টিলাগুলোতে তৈরি করা হয়েছে গোলঘর বিশ্রামাগার।

সিন্দুকছড়ি-মহালছড়ি সড়ক (Sindukchari-Mahalchari road)

ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য মহালছড়ি ও সিন্দুকছড়ির আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তায় বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর পাহাড়ি রাস্তাগুলোর একটি নির্মিত হয়েছে। এটি জালিয়াপাড়া সড়ক নামেও পরিচিত। বাইকারসহ রোমাঞ্চকর রাস্তায় ভ্রমণের জন্য আগ্রহী সকলের কাছেই এটি অত্যন্ত আকর্ষণীয়।

ফেনী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

রাজাঝির দীঘি (Rajajhir Dhigi)

রাজাঝির দীঘি বা রাজনন্দিনীর দীঘি য়ফেনী শহরের জিরো পয়েন্টে অবস্থিত। প্রায় ৭০০ বছর পূর্বে ত্রিপুরা রাজ্যের এক প্রভাবশালী রাজকন্যার অন্ধত্ব দূরীকরণের উদ্দেশ্যে এই দীঘি খরম করা হয়েছিল। এর মোট আয়তন প্রায় ১০.৩২ একর। বর্তমানে এই দীঘিকে কেন্দ্র করে ফেনী কোর্ট মসজিদ, সদর থানা, অফিসার্স ক্লাব, শিশু পার্ক সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা গড়ে উঠেছে।

প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি (Pratappur Zamindar Bari)

প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী জেলার অন্তর্গত দাগনভূঞা উপজেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। আনুমানিক ১৮৫০/১৮৬০ সালে এটি নির্মিত হয়েছে। তৎকালীন স্থানীয় সকল জমিদার বাড়ি গুলোর মধ্যে এটিই ছিল শীর্ষস্থানীয়।

মুহুরী প্রজেক্ট (Muhuri Project)

মুহুরী প্রজেক্ট ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলায় অবস্থিত দেশের প্রথম বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেচ প্রকল্প। দেশের সবচেয়ে বড় মৎস্য জোন হিসেবেও এটি পরিচিতি পেয়েছে। তাই চট্টগ্রাম বিভাগের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে এটি স্থান করে নিয়েছে।

শমসের গাজীর বাঁশের কেল্লা রিসোর্ট (Shamsher Gazir Bansher Kella Resort)

এটি ফেনী জেলার ট্রাঙ্ক রোড থেকে ৭ কিলোমিটার আগে ছাগলনাইয়া উপজেলার চম্পকনগর গ্রামে অবস্থিত। এই রিসোর্টের বাঁশের নির্মাণশৈলী ভ্রমণ পিয়াসীদের জন্য বিনোদনের অন্যতম আকর্ষণীয় মাধ্যম।

বিজয় সিংহ দীঘি (Vijay Singh Dighi)

বিজয় সিংহ দিঘী বিখ্যাত সেন বংশের প্রতিষ্ঠাতা বিজয় সেনের একটি অমর কীর্তি। এটি ফেনী শহরের প্রায় ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে বিজয় সিংহ গ্রামে ফেনী সার্কিট হাউজের সামনে অবস্থিত। নয়নাভিরাম এই দীঘির আয়তন প্রায় ৩৭.৫৭ একর। উঁচু পাড় ও সবুজ বৃক্ষ ঘেরা এই দীঘিটি একটি মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার।

চাঁদপুর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

বড় স্টেশন (Boro Station)

রুপালি ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর জেলার অন্যতম আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান বড় স্টেশন। পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া এই ৩ নদীর মিলনস্থলটিই বড় স্টেশন বা মোলহেড নামে পরিচিত। তিনটি নদীর মোহনায় সূর্যাস্তের দৃশ্য, ছোট ছোট নৌকার ভেসে চলা, নদীর কোলে পানি আছে পড়ার শব্দ এই স্থানটিকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

হাজিগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ (Hajiganj Historical Big Mosque)

এই মসজিদটি চাঁদপুর জেলার হাজিগঞ্জে অবস্থিত শৈল্পিক কারুকার্যময় একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। আয়তনের দিক থেকে এটি উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম। এর আয়তন প্রায় ২৮,৪০০ বর্গফুট। এখানে একসাথে প্রায় দশ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। এখানে প্রায় ১৮৮ ফুট উঁচু দৃষ্টিনন্দন মিনার রয়েছে। এই ঐতিহাসিক মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা ও ওয়াকীফ হাজী আহমাদ আলী পাটোয়ারী (রঃ)।

লোহাগড়া মঠ (Lohagarh Moth)

লোহাগড়া মঠ চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার চান্দ্রা বাজার থেকে ১.৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন নিদর্শন। প্রায় ২০০ বছর পূর্বে জমিদার বংশের লোহা ও গড়হ নামের অত্যাচারী ও প্রতাপশালী দুই ভাই ডাকাতিয়া নদীর কুল ঘেঁষে এই মঠটি নির্মাণ করেছিল। 

লক্ষ্মীপুর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

খোয়াসাগর দীঘি (Khoa Sagor Dighi)

এটি লক্ষীপুর সদর উপজেলার দালাল বাজার এলাকায় অবস্থিত প্রায় ২৫ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত একটি দীঘি। দীঘির এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে তাকালে মনে হয় কুয়াশায় ঢেকে আছে। স্থানীয়দের মতে, জমিদার ব্রজবল্লভ রায় আনুমানিক ১৭৫৫ সালে এই দীঘিটি খনন করেছিলেন। প্রাচীন এই দীঘিকে ঘিরে নানান কল্পকাহিনী কথিত রয়েছে।

মতিরহাট সৈকত (Motirhat Beach)

লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগরের মেঘনা নদীর তীরে মতিরহাট সৈকত অবস্থিত। মেঘনার ভাঙ্গন প্রতিরোধে মতিরহাট বাজার রক্ষা বাঁধ নির্মাণের ফলে প্রাকৃতিকভাবে ২ কিলোমিটার পর্যন্ত এক অপরূপ বেলাভূমির জন্ম হয়। নদীর তীরে রয়েছে সুবিশাল নারিকেল ও সুপারি বাগান, ইলিশের হাট ও বৈচিত্র্যময় দৃশ্য। এই বেলাভূমির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে, অনেকেই একে ‘মিনি কক্সবাজার’ বলে।

আরো পড়ুন: রাজশাহী বিভাগের সকল জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ 

জ্বীনের মসজিদ (Jiner Mosjid)

জ্বীনের মসজিদ লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার এনায়েতপুর নামক স্থানে অবস্থিত। ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি ১৮৮৮ সালে ৫৭ শতাংশ জমির উপর নির্মিত হয়েছিল। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১১০ ফুট এবং প্রস্থ ৭০ ফুট। এতে বড় আকারের তিনটি গম্বুজ এবং মসজিদের তলদেশে ২৫ ফুট গভীরে একটি গোপন ইবাদতখানা রয়েছে। মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মাওলানা আব্দুল্লাহ। প্রচলিত আছে রাতের আধারে জ্বীনেরা এই মসজিদ নির্মাণ করেছিল এবং গভীর রাতে স্থানীয়রা জ্বীনদের জিকিরের আওয়াজ শুনতে পেতেন।

শেষকথা 

উপরোক্ত দর্শনীয় স্থানগুলো ছাড়াও আরো অসংখ্য আকর্ষণ রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ জুড়ে। চট্টগ্রাম বিভাগের সকল জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর প্রতিটি পর্যবেক্ষণে আপনার মনে প্রতিফলিত হবে বাংলার রূপবৈচিত্রের আসল সৌন্দর্য।

Scroll to Top