ঢাকা বিভাগের সকল জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ 

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা একটি প্রাচীন নগরী। ১৯৮২ সালে ঢাকাকে বিভাগ ঘোষণা করা হয়েছিল। বাঙালির স্বাধীনতার বহুকাল পূর্বে, ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের পরে ঢাকা নবগঠিত পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রাজধানী ছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পরে ঢাকা পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসনিক রাজধানীতে পরিণত হয়েছিল। বর্তমানে ঐতিহাসিক এই ঢাকা জেলাসহ সর্বমোট ১৩ টি জেলার সমন্বয়ে প্রশাসনিকভাবে ঢাকা বিভাগ বিস্তৃত। পানাম নগরীর মতো বহু প্রাচীন নগরী, রাজপ্রাসাদ, ঐতিহাসিক মসজিদ, জমিদার বাড়ি ইত্যাদি গড়ে উঠেছিল এই বিভাগে। বর্তমানে বহু প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশের পাশাপাশি আধুনিক পার্ক, রিসোর্ট ও নান্দনিক স্থাপত্যশৈলী ছড়িয়ে আছে এই বিভাগের আনাচে-কানাচে। ভ্রমণ প্রেমীদের জন্য তাই ঢাকা বিভাগের সকল জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা তুলে ধরা হলো এই লেখাতে।

ঢাকা জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

লালবাগ কেল্লা (Lalbagh Fort) 

লালবাগ কেল্লা ঢাকার দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের পুরান ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত একটি অসমাপ্ত মুঘল দুর্গ। বাংলাদেশের প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থানসমূহের মধ্যে লালবাগ কেল্লা সবচেয়ে বেশি নিপুণভাবে কষ্টি পাথর, মার্বেল পাথর ও রং-বেরঙের টালি দিয়ে তৈরি স্থাপনা। এখানে আকর্ষণীয় লালবাগ কেল্লা জাদুঘর, বাগান ঘেরা পরিবেশ, পরীবিবির সমাধি সৌধ, লালবাগ কেল্লা শাহী মসজিদ, কেন্দ্রস্থলে বিভিন্ন উপাদান ও হাম্মাম খানা, কয়েকটি ফোয়ারা, পাহাড়ি উঁচু টিলা, সুরঙ্গ পথ, পুকুর ইত্যাদি দেখতে পাবেন। 

বাইতুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ (Baitul Mukarram National Mosque)

বাইতুল মোকাররম মসজিদ রাজধানী ঢাকার পল্টনে অবস্থিত বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ হিসেবে পরিচিত। বাইতুল মোকাররম মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৬৮ সালে। আট তলা বিশিষ্ট এই মসজিদে একসাথে ৪০ হাজার মানুষ নামাজ পড়তে পারে।  

তারা মসজিদ (Tara Mosque)

তারা মসজিদ পুরান ঢাকার আরমানিটলায় আবুল খয়রাত সড়কে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। এই মসজিদে মোঘল স্থাপত্যশৈলীর প্রভাব রয়েছে। বর্তমানে মসজিদের গম্বুজের সংখ্যা পাঁচটি। তারা মসজিদটির বর্তমান দৈর্ঘ্য ৭০ ফুট ও প্রস্থ ২৬ ফুট। এই মসজিদের দেয়াল গুলো  চাঁদ, তারা, ফুল ও আরবি লিপি দ্বারা নকশা করা হয়েছে। 

আহসান মঞ্জিল (Ahsan Manzil)

আহসান মঞ্জিল পুরান ঢাকার ইসলামপুরের কুমারটুলি এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীরবর্তী একটি ঐতিহাসিক জাদুঘর। আহসান মঞ্জুলে রয়েছে মোট ৪ হাজার ৭৭ টি নিদর্শন, যা প্রাসাদের ২৩ টি কক্ষে প্রদর্শিত হচ্ছে। নয়টি কক্ষ সেই আমলের মতই রয়েছে, যা জনগণদের ইতিহাস প্রদর্শন করে। এই স্থাপনাতে নওয়াবদের ব্যবহৃত কাঠের আলমারি, বড় আয়না, বড় লোহার সিন্দুক, ঢাল ও তরবারি, কাজ ও চিনামাটির থালাবাসন, হাতির মাথার কঙ্কাল, ক্রিস্টালের তৈরি চেয়ার-টেবিল, বিভিন্ন তৈলচিত্র, সিংহাসন, অলংকৃত রূপা, ফুলদানি, রাজকীয় অতিথিদের বেডরুম ও নাচ ঘর এবং তৎকালীন বিখ্যাত ব্যক্তিদের প্রতিকৃতিও রয়েছে।

ফ্যান্টাসি কিংডম থিম পার্ক (Fantasy Kingdom Theme Park)

ফ্যান্টাসি কিংডম থিম পার্কটি ঢাকার অদূরে আশুলিয়া থানার জামগড়া এলাকায় অবস্থিত। এই পার্কটি ২০ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত। এই পার্কটির মধ্যে রয়েছে একটি থিম পার্ক, ওয়াটার পার্ক, শুষ্ক পার্ক ও হেরিটেজ কর্নার রয়েছে।  ফ্যান্টাসি কিংডম পার্কে প্রায় ২৪টি রাইড রয়েছে। যথা: বাম্পার কার, ঘূর্ণি পাখি, বিহ স্প্ল্যাশ, ইজি ডিজি, জুজু ট্রেন, হাইওয়ে কনভয়, সূর্য ও চাঁদ, বুল ডোজার, হ্যাপি কাঙ্গারু, শান্তা মারিয়া, থ্রিডি সিনেমা, বাচ্চাদের বাম্পার গাড়ি, রোলার কোস্টার, জাদুর গালিচা, স্পিড ওয়ে, টনি অ্যাডভেঞ্চার, স্কাই হপা, জিপ প্রায়, ঘূর্ণি টানেল, বাম্পার বোট, মুভিং টাওয়ার, রিডিম্পসন গেম, ইগলু হাউস, ফেরিস হুইল, জুনিয়র ফেরিস হুইল, রক এন রোল ইত্যাদি। 

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান (Suhrawardy Udyan) 

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঢাকার শাহাবাগে অবস্থিত বাংলাদেশের একটি বহুল তাৎপর্যপূর্ন ঐতিহাসিক স্থান। এটিকে পূর্বে রমনা রেসকোর্স ময়দান/ রমনা জিমখানা/ ঢাকার রেসকোর্স ইত্যাদি নামে ডাকা হতো। এখানে আকর্ষণীয় স্থাপনা গুলো হলো- স্বাধীনতা জাদুঘর, স্বাধীনতা স্তম্ভ, শিখা চিরন্তন, জনতার দেয়াল নামে ২৭৩ ফুট দীর্ঘ একটি দেয়াল চিত্র উল্লেখযোগ্য।

ওসমানী উদ্যান (Osmani Udyan) 

ওসমানী উদ্যান ঢাকার গুলিস্তানে নগর ভবন ও সচিবালয়ের পিছনে প্রায় ২৩.৩৭ একর জায়গা জুড়ে একটি ঐতিহাসিক মাঠ। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে ধারণ করতে ওসমানী উদ্যানকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। ওসমানি উদ্যানের ভিতরে রয়েছে স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভ, সম্রাট আওরঙ্গজেবের প্রধান সেনাপতি মীর জুমলার কামান, বিভিন্ন দুর্লভ গাছের সমারোহ এবং দেশি-বিদেশি নোনাজাতের ফুল-ফল। উদ্যানের মধ্যে দুইটি লেক ও দুইটি কৃত্রিম বালু দ্বীপ প্রায় ৫.৩৪ একর জায়গা জুড়ে রয়েছে।

চকবাজার শাহী মসজিদ (Chawkbazar Shahi Mosque)

চকবাজার শাহী মসজিদ ১৬৭৬ খ্রিস্টাব্দে মুঘল সুবেধার শায়েস্তা খান কর্তৃক নির্মিত একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। রাজধানী ঢাকার চকবাজার অবস্থিত এই মসজিদটির ধারণক্ষমতা প্রায় ১০ হাজার মুসল্লী।   

লালবাগ শাহী মসজিদ (Lalbagh Shahi Mosque)

লালবাগ শাহী মসজিদটি ১৭০৩ সালে নির্মিত একটি ঐতিহাসিক মসজিদ, যা লালবাগ কেল্লার দক্ষিণ পূর্বদিকে অবস্থিত। আকর্ষণীয় নান্দনিক সৌন্দর্যের এই মসজিদে একসাথে প্রায় ৮ হাজার মুসল্লী সালাত আদায় করতে পারে।

কসাইটুলি জামে মসজিদ (Kasaituli Jame Masjid)

কসাইটুলি জামে মসজিদটি রাজধানীর পুরান ঢাকার কসাইটুলির পিকে ঘোষ রোডে অবস্থিত একটি শতবর্ষী মসজিদ। এই মসজিদের গায়ে চিনামাটির সাদা টুকরো গুলো দিয়ে করা ‘চিনিটিকরির কারুকাজ’ খুবই আকর্ষণীয়।

বিরুলিয়া জমিদার বাড়ি (Birulia Jamidar Bari)

বিরুলিয়া জমিদার বাড়িটি বিরুলিয়া গ্রামের শেষ প্রান্তে অবস্থিত জমিদার রজনীকান্ত ঘোষের বাড়ি। ঢাকার তুরাগ নদীর তীরবর্তী ছোট্ট একটি গ্রামের নাম বিরুলিয়া। স্থানীয়দের মতে, তৎকালীন জমিদার নলিনী মোহন সাহার কাছ থেকে ৮৯৬০ টাকা ৪ আনি অর্থের বিনিময়ে জমিদার রজনীকান্ত ঘোষ এই বাড়িটি ক্রয় করেন। বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে জমিদার বাড়ির সদরঘর, বিচারঘর, পেয়াদাঘর, বিশ্রামঘর ও ঘোড়াশালাগুলো।

ওয়ান্ডারেলা গ্রীন পার্ক (Wonderella Green Park)

ওয়ান্ডারেলা গ্রীন পার্ক ঢাকা গুলিস্তান থেকে ৪৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত অনেক গাছপালা ও  সবুজ পরিবেশে ঘেরা ঢাকার দর্শনীয় পার্ক সমূহ এর একটি। ২০১৭ সালে ৯০ বিঘা জমির উপর এই পার্কটি তৈরি করা হয়। এই পার্কে রয়েছে সারি সারি ফুল ও ফলের বাগান, জলাধার, হেঁটে চলার প্রশস্ত রাস্তা ও বসার ব্যবস্থা, ফ্যামিলি ট্যুরের ব্যবস্থা, ট্রেন, সুইংচেয়ার, সোনার তরী, প্যাডেল বোট সহ নানা রকমের বিনোদনের ব্যবস্থা।

নন্দন পার্ক (Nandan Park)

নন্দন পার্ক ঢাকার অধুরে সাভারের নবীনগর চন্দ্রা হাইওয়ের বারইপাড়া এলাকায় অবস্থিত। ২০০৩ সালে প্রায় ৩৩ একর জমির উপর এটি প্রতিষ্ঠিত করা হয়। এই পার্ককে রয়েছে  আন্তর্জাতিক মানের দেশি বিদেশি বিভিন্ন রাইড,রেস্টুরেন্ট, ওয়াটার ওয়ার্ল্ড,  রিসোর্ট, ফাইভ ডি মুভি থিয়েটার ও কার পার্কিং এর সুবিধা।  

ফ্যান্টাসি আইল্যান্ড পার্ক (Fantasy Island Park)

রাজধানীর উত্তরায় ১৫ নম্বর সেক্টরে খালপাড়ের দিয়া বাড়িতে রয়েছে একটি অ্যামিউজমেন্ট পার্ক যার নাম ফ্যান্টাসি আইল্যান্ড পার্ক। এই পার্কটি ৩ একর জায়গার উপর নির্মাণ করা হয়েছে।  পার্কটিতে ২৩ টি রাইড রয়েছে। এগুলো হলো -ম্যারি গো রাউন্ড,সুইংকার,বানজি জাম্প,  মিনিকার, পেন্ডুলাম, হুইলার স্কুটি, লেডি বাগ, বে পাইরেট শিপ,বাম্পার বোট,অক্টোপাস, বাম্পার কার, প্যারা ট্রুপার,স্কাইফল, চিলড্রেন ট্রেন, অ্যানিম্যাল কিডি রাইড, সেল্ফকন্ট্রোল প্লেন ইত্যাদি রাইড রয়েছে। 

আলাদিন পার্ক (Aladdin Park)

আলাদিন পার্কটি রাজধানী ঢাকার ধামরাই উপজেলার সিতি এলাকায় অবস্থিত প্রায় ৪০ বিঘা জমির উপর একটি বিনোদনের কেন্দ্র। আলাদিন’স পার্কের বিভিন্ন রাইডের মধ্যে রয়েছে- ডাবল ডেক কেরোসেল,বাম্পার কার, স্পিড স্পিনিং কার, বুল রাইড, হাইড্রলিক পেন্ডুলাম, টয় ট্রেন, সুপার সুইং,কিডি রাইডস  জোন, ম্যাজিক শো, প্যাডেল বোট এবং ১২ ডি ডায়নামিক সিনেমা হল। বাচ্চাদের জন্য তিনটি আলাদা পুল রয়েছে এবং এখানে লকার ব্যবস্থা ও নারী-পুরুষের জন্য আলাদা চেঞ্জিং রুম রয়েছে এবং অনেক বড় পিকনিক স্পট। 

বুড়িগঙ্গা ইকো পার্ক (Buriganga Eco Park)

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার শ্যামপুরে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে প্রায় ২.৩ একর জায়গার উপর ইকো পার্ক অবস্থিত। বুড়িগঙ্গা ইকো পার্কে ক্যাপসুল, স্ট্রাইকিং কার, মেরি গো রাউন্ড, ৯ডি সিনেমা ও বুল ফাইট ইত্যাদি রাইড, বসার স্থান, ফুডকোর্ট, নৌঘাট ও নদীর তীরের আকর্ষণীয় দৃশ্য উপভোগ করার জন্য রয়েছে হাঁটার রাস্তা। যে দৃশ্য সবার মনকে প্রফুল্ল করে তোলে।

তামান্না ওয়ার্ল্ড ফ্যামিলি পার্ক (Tamanna World Family Park)

তামান্না ওয়ার্ল্ড ফ্যামিলি পার্ক রাজধানী ঢাকার মিরপুর-১ এর চটবাড়ি এলাকায় আশুলিয়া বেরিবাধ সড়ক সংলগ্নে প্রায় ১ একর জায়গা নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। এই পার্কে পিকনিক,  জন্মদিন ও পার্টিসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন ওয়াটার প্লে গ্রাউন্ড, খাবারের রেস্টুরেন্ট, সুইমিং পুল এবং আকর্ষণীয় কিছু রাইড রয়েছে।

গাজীপুর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট (Rajendra Eco Resort)

রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট গাজীপুর জেলার রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে শালবনের ভেতরে প্রায় ৮০ বিঘা জমির উপর যৌথ মালিকানায় গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে লেক-এ মাছ ধরা, নৌকা ও সাইকেল চালানো, সুইমিং পুল, ম্যাসেজ পার্লার ও ক্যাফেটেরিয়া উপভোগ করতে পারবেন।

ভাওয়াল রাজবাড়ী (Bhawal Rajbari)

ভাওয়াল রাজবাড়ী গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরে প্রায় ৫ একর জায়গার উপর স্থাপিত এক ঐতিহাসিক স্থাপনা। বর্তমানে এটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দোতলা এই বাড়িটিতে সর্বমোট প্রায় ৩৬৫টি কক্ষ রয়েছে। এই বাড়ির পশ্চিম দিকে একটি বিশাল দীঘি ও সামনে বিস্তৃত সমতল মাঠ রয়েছে।

জল ও জঙ্গলের কাব্য (Jol O Jongoler Kabbo)

জল ও জঙ্গলের কাব্য হলো গাজীপুর জেলার টংগীর পুবাইলে প্রায় ৯০ বিঘা জমির উপর গড়ে তোলা একটি রিসোর্ট। মূলত বাঁশ আর পাটখড়ি দিয়ে সুনিপুণ ডিজাইনের মাধ্যমে এটি সাজানো হয়েছে। দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশির মাঝে এই নৈপুণ্য দেখার পাশাপাশি এই রিসোর্টের নিজস্ব জমিতে শাক-সবজি, ধান এবং বিলের মাছ দিয়ে তৈরি খাবার খেতে পারবেন।

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক (Bangabandhu Safari Park)

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নে অবস্থিত প্রায় ৩,৬৯০ একর জায়গাজুড়ে গড়ে উঠা একটি অসাধারন পার্ক। এখানে বাঘ, সিংহ, জেব্রা, জিরাফ, বন্য হরিণ ও অন্যান্য প্রানীর উন্মুক্ত বিচরন দেখতে পাবেন মিনিবাসে ঘুরে।

নারায়ণগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

পানাম নগর (Panama City)

পানাম নগরী, পানাম সিটি বা হারানো নগরী নামে পরিচিত প্রাচীন ঐতিহাসিক নগরীটি ঢাকার পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানায় অবস্থিত। ১৫ শতকে ঈশা খাঁ সোনারগাঁয়ে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বাংলার প্রথম রাজধানী স্থাপন করেন। পৃথিবীর ধ্বংস প্রায় ১০০টি ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে এটি অন্যতম।

বাংলার তাজমহল (Taj Mahal of Bengal)

বাংলার তাজমহল নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার পেরাব গ্রামে অবস্থিত। পৃথিবীর প্রাচীন সপ্তাশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম ভারতের আগ্রার তাজমহলের মতো করে এই বাংলার তাজমহল নির্মাণের জন্য ২০০৩ সালে কাজ শুরু করে ২০০৮ সালের সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। 

মায়াদ্বীপ (Mayadip)

মায়াদ্বীপ নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার বারদী ইউনিয়নের এলাকায় মেঘনা নদীর বুকে জেগে ওঠা একটি ত্রিভুজ আকৃতির চর। নদীর ঢেউয়ের সমান্তরালে বয়ে চলা বাতাস, খোলা প্রান্তর আর চারিদিকের প্রাকৃতিক ল্যান্ডস্কেপ মনকে প্রশান্তিতে ভরিয়ে দেয়।

জিন্দা পার্ক (Zinda Park)

জিন্দা পার্ক নারায়ণগঞ্জ জেলার দাউদপুর ইউনিয়নের প্রায় ১৫০ একর জায়গাজুড়ে গড়ে ওঠা একটি দর্শনীয় স্থান। এই পার্কে ৫টি জলাধার, অসংখ্য পাখি, টং ঘর, বড় সান বাঁধানো পুকুর, মার্কেট, অতি সুন্দর স্থাপত্যশৈলীর লাইব্রেরী, ক্যান্টিন ও মিনি চিড়িয়াখানা এবং ১০ হাজারেরও বেশি গাছ রয়েছে।

ফুলের গ্রাম সাবদি (Flower Village Sabdi)

ফুলের গ্রাম সাবদি নারায়ণগঞ্জ জেলার একটি আকর্ষণীয় ভ্রমণ স্থান। শীতকালে এখানে হলুদ সরিষা ফুল, ফেব্রুয়ারি মাসে গোলাপ, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, কসমস, ডেইজি জিপসি, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা ইত্যাদি বিভিন্ন ফুলের চাষ হয়।

নরসিংদী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

উয়ারী বটেশ্বর (Uari Bateswar)

ওয়ারী ও বটেশ্বর হলো দুইটি পার্শ্ববর্তী গ্রাম। নরসিংদী জেলার বেলাবো উপজেলায় প্রাচীন প্রত্নতত্ত্বের নিদর্শন হিসেবে পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদীর অববাহিকায় এই দুটি গ্রাম প্রাচীনকালের অসংখ্য নিদর্শন ধারণ করে আছে। তৎকালীন সময়ে নদীবন্দর ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া এই দুটি গ্রামে ঘুরতে আসেন অনেকেই।

সোনাইমুড়ী টেক (Sonaimuri Tech)

সোনাইমুড়ী টেক নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার বাগাঘ ইউনিয়নের কুন্দেরপাড়ায় অবস্থিত একটি লাল মাটির শহর। এখানে মাটির পাহাড়ি টিলা, সমতল ভূমির বসতবাড়ি, পাখির কলকাকলি ও অপার সৌন্দর্যে ঘেরা।

হেরিটেজ রিসোর্ট (Heritage Resort)

হেরিটেজ রিসোর্ট নরসিংদী জেলার মাধবদীর নওপাড়ায় অবস্থিত প্রায় ১৫০ বিঘা জায়গাজুড়ে নির্মিত একটি রিসোর্ট। এখানে ওয়াটার ভিলা, আধুনিক কটেজ, পুল ভিলা, ওয়েব বিচ, সুইমিং পুল, রেস্টুরেন্ট, কনভেনশন সেন্টার, কালচারাল হল ইত্যাদি সুবিধা রয়েছে।

মুন্সিগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

ইদ্রাকপুর কেল্লা (Idrakpur Fort)

ইদ্রাকপুর কেল্লা মুন্সিগঞ্জ জেলা সদরে অবস্থিত প্রায় ৩৫০ বছর পুরনো মোঘল স্থাপত্যের একটি ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন। তৎকালীন সময়ে মগ জলদস্য এবং পর্তুগিজদের হাত থেকে ইদ্রাকপুরকে রক্ষার জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল।

মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট (Meghna Village Holiday Resort)

মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়ায় প্রায় ৩০ বিঘা জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে মিনি চিড়িয়াখানা, বিভিন্ন রাইড, এসি/নন এসি কটেজ, বাংলা ও চাইনিজ খাবার, বারবিকিউ, পিকনিক এবং মাছ ধরার ব্যবস্থা রয়েছে।

আড়িয়াল বিল (Arial Bill)

আড়িয়াল বিল ঢাকার দোহার নবাবগঞ্জ এবং মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর ও সিরাজদিখান উপজেলার প্রায় ১৩৬ বড় কিলোমিটার জায়গাজুড়ে বিস্তৃত। মুন্সিগঞ্জে থাকা এর অধিকাংশ অংশে শাপলা ও কচুরিপানার ফুল, নানা জাতের মাছ ও পাখির বিচরণ রয়েছে।

মানা বে ওয়াটার পার্ক (Mana Bay Water Park)

মানা বে ওয়াটার পার্ক মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত। এটি প্রায় ৬০ হাজার স্কয়ার মিটার জুড়ে বিস্তৃত বাংলাদেশের প্রথম প্রিমিয়াম ওয়াটার পার্ক। প্রায় ১৭টি রাইড সমৃদ্ধ এই পার্কটি দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম।

মানিকগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি (Baliati Zamindar House)

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলা থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামে অবস্থিত। উনিশ শতকের নির্মিত ঐতিহ্যবাহী এই প্রাসাদের চত্বরটি প্রায় ১৬,৫৫৪ বর্গমিটার। দৃষ্টিনন্দন এই জমিদার বাড়ির প্রাসাদে সুনিপুণ কারি কার্যমন্ডিত ২০০ টি কক্ষ রয়েছে

নাহার গার্ডেন পিকনিক স্পট (Nahar Garden Picnic Spot)

নাহার গার্ডেন পিকনিক স্পট মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের কামতা গ্রামে ধলেশ্বরী নদীর কোল ঘেঁষে গড়ে তোলা একটি কোলাহলমুক্ত শান্ত পিকনিক স্পট। এখানে ২০ প্রজাতির টিয়া, ১৫ প্রজাতির ঘুঘু, বাজরাঙ্গা, লাভ বার্ড, ফিনস, ককেটেল, গেরে প্যারেট, মেকাউ, বানর, উট, হরিণ, ময়ূর ইত্যাদি রয়েছে। 

টাঙ্গাইল জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

মধুপুর জাতীয় উদ্যান (Madhupur National Park)

মধুপুর জাতীয় উদ্যান টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলায় অবস্থিত কয়েক’শো বছরের পুরাতন বরঞ্চ নিয়ে গঠিত। এই উদ্যানের মোট আয়তন প্রায় ৮৪,৩৬৬ হেক্টর। এখানে ১১ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৭ প্রজাতির সরীসৃপ, ৪ প্রজাতির উভচর এবং ৩৮ প্রজাতির পাখি এবং বহু প্রজাতির লতাগুল্ম ও বৃক্ষরাজি রয়েছে।

২০১ গম্বুজ মসজিদ (201 Dome Mosque)

২০১ গম্বুজ মসজিদ টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামে অবস্থিত পৃথিবীর সর্বাধিক সংখ্যক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ। ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে ১৫ বিঘা জমির উপর ২০১টি গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি নির্মাণ করা শুরু হয়।

পীরগাছা রাবার বাগান (Pirgacha Rubber Plantation)

পীরগাছা রাবার বাগান টাঙ্গাইল জেলার মধুপুরের পীরগাছায় ১৯৮৬ সালে গড়ে তোলা একটি আকর্ষণীয় স্থান। প্রায় ৩ হাজার একর জায়গা জুড়ে থাকা এই বাগানে প্রায় ১ লক্ষ ৫৪ হাজার রাবার গাছ রয়েছে। 

কিশোরগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

শোকালিয়া ঈদগাহ ময়দান (Shokalia Eidgah Maidan)

শোকালিয়া ঈদগাহ ময়দান কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে নরসিংদী নদীর তীরে অবস্থিত উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ঐতিহ্যবাহী ঈদগাহ ময়দান। ঐতিহাসিক তথ্যমতে, ১৮২৮ সাল থেকে এই মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই মাঠে মোট ২৬৫ টি সারি আছে, যার প্রতিটিতেই ৬০০-৭০০ মুসল্লী দাঁড়াতে পারবে।

নিকলী হাওর (Nikli Haor)

নিকলী হাওর কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলায় অবস্থিত। এখান থেকে পানিতে দ্বীপের মতো ভেসে থাকা ছোট ছোট গ্রাম, স্বচ্ছ পানির খেলা, জেলেদের মাছ ধরা, রাতারগুলের মতো ছোট জলাভূমি এবং হাওরের তরতাজা মাছের স্বাদ নেওয়া যায়।

ফরিদপুর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

পাতরাইল মসজিদ (Patrail Mosque)

পাতরাইল মসজিদ ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। নান্দনিক কারুকার্যময় প্রাচীন এই মসজিদটি মজলিস আউলিয়া মসজিদ নামেও পরিচিত।

ফরিদপুর পৌর শেখ রাসেল শিশুপার্ক (Faridpur Municipal Sheikh Russell Children’s Park)

ফরিদপুর পৌর শেখ রাসেল শিশুপার্ক ফরিদপুর জেলা শহরের গোয়ালচামোট নামক স্থানে প্রায় ১৪ একর জায়গাজুড়ে নির্মাণ করা ওয়ান্ডারল্যান্ড। এখানে ভুতুড়ে গুহা, চলন্ত ট্রেন, সুইং চেয়ার, ওয়ান্ডার হুইলসহ ৩০টির বেশি রাইড, লেক, মিনি চিড়িয়াখানা, ভিডিও গেমস, পিকনিক স্পট ইত্যাদি রয়েছে।

মাদারিপুর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

শকুনি লেক (Shakuni Lake)

শকুনি লেক মাদারীপুর জেলার একটি ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর লেক। প্রায় ২০ একাউন্ট আয়তনের এই লেক সংশ্লিষ্ট জায়গায় ওয়াচ টাওয়ার, কৃত্রিম ঝর্ণা, কফিশপ, রেস্টুরেন্ট এবং অন্যান্য সুবিধা রয়েছে।

সেনাপতির দিঘী (Senapotir Dighi)

সেনাপতির দিঘী মাদারীপুর জেলার আমড়াতলা ও খাতিয়াল গ্রামের মধ্যবর্তী কালকিনি উপজেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন। ১৬৬৫ সালে প্রায় ১৫ একর জায়গা জুড়ে এই দিঘীটি তৈরি করা হয়েছিল।

শরিয়তপুর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম (Modern Fantasy Kingdom)

মর্ডান ফ্যান্টাসি কিংডম শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার কলুকাঠি গ্রামে প্রায় ৫০ একর জায়গা নিয়ে ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। এখানে বিভিন্ন ধরনের রাইড, মিনি চিড়িয়াখানা, শিশু রাইড, ক্যাবল কার ইত্যাদি রয়েছে।

মহিষারের দিগশ্বরী দীঘি (Dighaswari Dighi of Mahiser)

মহিষারের দিগশ্বরী দীঘি শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৬০০ বছরের পুরনো একটি ঐতিহাসিক কীর্তি। মুঘল শাসন আমলে স্বাধীন বারো ভূঁইয়ার এক ভূঁইয়া প্রায় ১০ একর জায়গার উপর এই দীঘি খনন করেছিলেন।

গোপালগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

শেখ রাসেল শিশু পার্ক (Sheikh Russell Children’s Park)

শেখ রাসেল শিশু পার্ক গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় অবস্থিত একটি পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র। মধুমতি নদীর তীরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে প্রায় ৫ একর জায়গা জুড়ে গড়ে তোলা এই পার্কে ১৪ টিরও বেশি আকর্ষণীয় রাইড রয়েছে।

মধুমতি বাওড় (Madhumati Baur)

মধুমতি বাওড় গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে গড়ে ওঠা একটি জলাশয়। এটি প্রায় ১৬২ হেক্টর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত, যা মৌসুম ভেদে ভিন্ন ভিন্ন নবরূপে সেজে ওঠে।

রাজবাড়ি জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের লাল ভবন

রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের লাল ভবনটি প্রায় দেড়শ বছরের পুরনো একটি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন। গোয়ালন্দ মহকুমার কাঁচারী ঘর হিসেবে ব্যবহৃত এই ঘরটি ১৮৯২ সালে জমিদার গিরিজা শংকর মজুমদার এই লাল ভবনে গোয়ালন্দ মডেল হাই স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।

আরও পড়ুন: সিলেট বিভাগের সকল জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ 

কল্যান দীঘি (Kalyan Dighi)

কল্যান দীঘি রাজবাড়ী জেলার নবাবপুর ইউনিয়নে রাজধরপুর গ্রামের পাশে অবস্থিত। প্রায় ১৬ খাদা জমি নিয়ে এই দীঘিটি অষ্টাদশ শতকে রাজা সীতারাম কল্যাণ খনন করেছিলেন। ধারণা করা হয়, সাধারণ মানুষের পানির কষ্ট দূর করার জন্য এই দীঘি খনন করা হয়েছিল।

শেষকথা

ঢাকা বিভাগের প্রতিটি জেলাতেই দর্শনীয় স্থান রয়েছে অনেক। উপরোক্ত ঢাকা বিভাগের সকল জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ ছাড়াও আপনার এলাকায় স্থানীয়ভাবে আরও বহু দর্শনীয় স্থান পাবেন। আপনার কাঙ্খিত স্থানে ভ্রমণে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই সেখানে সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

Scroll to Top