১০০+ ইসলামিক উক্তি। আল্লাহর বাণী, হাদিস এবং বিখ্যাত মনীষীদের ইসলামিক উক্তি

আপনার জীবনের বর্তমান অবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ১০০+ ইসলামিক উক্তি জেনে নিন এখানে।

মানবজাতির জীবন যাপনের প্রতিটি দিকনির্দেশনা আল্লাহর বাণী পবিত্র কুরআনে এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর হাদিস থেকে পেয়ে থাকি। জীবনে প্রতিটি মুহূর্তে নানান পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। এ সময় সঠিক দিক নির্দেশনা এবং অনুপ্রেরণা পেতে ইসলামিক উক্তি গুলো হতে পারে সর্বোত্তম উপায়। তাই আল্লাহর বাণী, হাদিস এবং বিখ্যাত মনীষীদের উক্তিসহ ১০০+ ইসলামিক উক্তি তুলে ধরা হলো এই লেখাতে।

সত্য নিয়ে ইসলামিক উক্তি

(১) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন- “সেই ব্যক্তিই সবচেয়ে সুন্দর ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী মানুষ, যে প্রকৃত হিংসা-বিদ্বেষ থেকে মুক্ত অন্তরের অধিকারী এবং সত্যবাদী।” – আল হাদিস

(২) রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “সে ব্যক্তির ধ্বংস নিশ্চিত, যে ব্যক্তি অন্যদের হাঁসাতে জন্য মিথ্যা কথা বলে।” – আল হাদিস

(৩) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন- “যে ব্যক্তি পৃথিবীতে মিথ্যা কথা বলবে, কেয়ামতের দিন তার ২টি আগুনের জিব্বা হবে।” – আল হাদিস

(৪) রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “তোমরা মিথ্যা বলা থেকে বেঁচে থাকো, নিশ্চয়ই মিথ্যা মানুষের ঈমানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।” – আল হাদিস

(৫) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন- “তোমাদের মাঝে উত্তম চরিত্র, সত্য কথা বলা, আমানত রক্ষা করা, হালাল রুজি, এই ৪ টি জিনিস থাকলে, দুনিয়ার সকল কিছু হারিয়ে গেলেও তোমাদের ক্ষতি নেই।” – আল হাদিস

(৬) হযরত আলী (রাঃ) বলেন- “সত্যবাদী ও বুদ্ধিমান ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারোও সঙ্গ কামনা করো না।”

(৭) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন- “সেই ব্যক্তিই হলো শ্রেষ্ঠ মানুষ, যার অন্তর পরিচ্ছন্ন এবং মুখ সত্যবাদী।” – ইবনে মাজাহ: ৪২১৬

মৃত্যু নিয়ে ইসলামিক উক্তি

(৮) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “প্রতিটি প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।” – আল কোরআন

(৯) আল কোরআনে বর্ণিত রয়েছে যে- “তোমরা যেখানেই অবস্থান করোনা কেন, মৃত্যু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের অভ্যন্তরেও থাকো, তবুও।”

(১০) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “হে প্রশান্ত আত্মা, তুমি তোমার রবের কাছে ফিরে আসো সন্তুষ্ট চিত্তে ও সন্তোষভাজন হয়ে। অতঃপর আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হও, আর আমার জান্নাতে প্ৰবেশ কর।” – আল কোরআন 

(১১) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “মৃত্যু হচ্ছে অনন্ত পথযাত্রার প্রথম ধাপ।” – আল হাদিস

(১২) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “যারা মৃত্যুকে অধিক স্মরণ করে এবং পরকালীন জীবনের জন্য উত্তমরূপে প্রস্তুতি নেয়, তারাই সবচেয়ে বুদ্ধিমান।” – সুনানে ইবনে মাজাহ (৪২৫৯)

সেরা ইসলামিক উক্তি

(১৩) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন- “যে ব্যক্তি অন্যদের প্রতি দয়া করে না, মহান আল্লাহ তায়ালা তার উপর রহমত বর্ষণ করেন না।” – আল হাদিস

(১৪) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তা’আলা, মানুষের মৃত্যুর গরগরা না আসা পর্যন্ত তার বান্দার দোয়া কবুল করেন।” – তিরমিজি: ৩৫৩৭

(১৫) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “রোজাদারদের পুরষ্কার আল্লাহ নিজ হাতে দিবেন।” – আল হাদিস

(১৬) হযরত আবু বকর (রাঃ) বলেন- “সেই ব্যক্তি অভিশপ্ত, যে মৃত্যুবরণ করে অথচ তার খারাপ কাজগুলো পৃথিবীতে থেকে যায়।”

আরো পড়ুন: মেয়েদের ইসলামিক নাম – নামের অর্থসহ তালিকা

(১৭) হযরত আলী (রাঃ) বলেন- “অযাচিত দানই প্রকৃত দান; চাইলে অনেক সময় চক্ষুলজ্জায় লোকে দান করে, কিন্তু তা প্রকৃত দান নয়।”

(১৮) হযরত আলী (রাঃ) বলেন- “যে নিজের মর্যাদা বোঝে না, অন্যরাও তার মর্যাদা দেয় না।”

(১৯) হযরত আলী (রাঃ) বলেন- “স্বাস্থ্যের চেয়ে বড় সম্পদ এবং অল্পে তুষ্টির চেয়ে বড় সুখ আর কিছুই নেই।”

কষ্ট নিয়ে ইসলামিক উক্তি

(২০) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “নিশ্চয়ই কষ্টের সাথেই আছে স্বস্তি।” – (সূরা আলাম নাশরাহ, আয়াত: ৬)

(২১) হযরত উমর (রাঃ) বলেন- “একাকি হয়ে যাওয়া মানে তুমি খারাপ সঙ্গ ত্যাগ করেছ।”

(২২) হযরত আলী (রাঃ) বলেন- “এই দুনিয়ার প্রতি অত্যাধিক আকর্ষণই সকল দুঃখের মূল।”

(২৩) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন- “মানুষ যদি মৃত ব্যাক্তির আর্তনাদ দেখতে ও শুনতে পেত, তাহলে মানুষ মৃত ব্যাক্তির জন্য কান্না না করে নিজের জন্য কাঁদত।”

(২৪) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “রাগ মানুষের ঈমানকে নষ্ট করে, হিংসা মানুষের নেক আমলকে ধ্বংস করে, আর মিথ্যা মানুষের হায়াত কমিয়ে দেয়।”

আরও পড়ে নিন: কষ্টের স্ট্যাটাস – উক্তি ও ক্যাপশন

বিয়ে নিয়ে ইসলামিক উক্তি

(২৬) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন- “নিশ্চয় সে বিয়ে বেশি বরকতময়, যে বিয়েতে খরচ কম হয়।”

(২৭) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “যখন কেউ তোমাদের মধ্যে এমন কাউকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, যার ধর্ম ও চরিত্র আপনাকে পছন্দ করে, তখন তাকে বিয়ে করা উত্তম। যদি তোমরা তা না কর, তাহলে পৃথিবীতে ফিতনা ছড়িয়ে পড়বে।”

(২৮) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন- “একজন মুসলিম নারীর স্বামী হচ্ছে তার পরিধানের বস্ত্রের মতো। একটি বস্ত্র যেমন তার লজ্জাকে ঢেকে রাখে, তেমনি তার স্বামী তাকে সকল বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করে।”

(২৯) মহান আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কোরআনে বলেন- “তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন। যাতে তোমরা তাদের সাথে শান্তিতে থাকো এবং তিনি তোমাদের মাঝে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়াবোধ সৃষ্টি করেছেন।” – (সূরা রুম, আয়াত: ২১)

(৩০) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “তারা (স্ত্রীগণ) তোমাদের পোশাক এবং তোমরা (স্বামীগণ) তাদের পোশাকস্বরূপ।” – (সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭)

বিশ্বাস নিয়ে ইসলামিক উক্তি

(৩১) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “অতএব, যখন তুমি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, তখন আল্লাহর উপর ভরসা কর।” – (সূরা আল ইমরান, আয়াত: ১৫৯)

(৩২) বিশ্বাস নিয়ে আব্রাহাম লিংকন বলেন- “প্রত্যেককে বিশ্বাস করা বিপদজনক। কিন্তু কাউকে বিশ্বাস না করা, আরো বেশি বিপদজনক।”

(৩৩) আল্লামা ইকবাল বলেন- “দৃঢ় বিশ্বাস, অনবরত প্রচেষ্টা করা এবং বিশ্বজয়ী জীবনযুদ্ধই হলো মানুষের প্রধান হাতিয়ার।”

(৩৪) এইচ. আর. এস. বলেন- “বিশ্বাস অর্জন করতে কয়েক যুগ লেগে যেতে পারে। কিন্তু সেই বিশ্বাস ভেঙ্গে যেতে, একটি মুহূর্তই যথেষ্ট।”

(৩৫) জণ মিল্টন বলেন- “বিশ্বাস জীবনকে গতিময়তা দেয়,,,, আর অবিশ্বাস জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে।”

মহানবীর বাণী ইসলামিক উক্তি

(৩৬) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন- “রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর তা’আলার কাছে মেশ’কের চেয়েও বেশী সুগন্ধিযুক্ত।” – আল হাদিস

(৩৭) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “বান্দার উপর আল্লাহর অধিকার হলো,,,, তারা (বান্দারা) কেবল তাঁরই (আল্লাহর) আনুগত্য ও দাসত্ব করবে এবং তাঁর (আল্লাহর) সাথে কোনো অংশীদার বানাবেনা।” – সহীহ মুসলিম

(৩৮) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন- “আল্লাহর পথে একটি সকাল কিংবা একটি সন্ধ্যা অতিবাহিত করা,,,, পৃথিবী ও পৃথিবীর সমগ্র সম্পদের চেয়ে উত্তম।” – সহীহ বুখারী

(৩৯) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “প্রত্যেক ব্যক্তি তার কাজের জন্য সেই প্রতিদান পাবে, যা সে নিয়ত করবে।” – সহীহ বুখারী

(৪০) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “আল্লাহর তা’আলা তোমাদের চেহারা-সুরত ও সম্পদ দেখেননা,,,,, তিনি দেখেন তোমাদের অন্তর ও কর্ম।” – সহীহ মুসলিম

ছোট ছোট ইসলামিক উক্তি

(৪২) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “যে আল্লাহর বানীকে বিজয়ী করার জন্য লড়ে যায়, সেই আল্লাহর পথে জিহাদকারী।” – সহীহ বুখারী

(৪৩) বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন- “স্বামী খুশি থাকা অবস্থায় কোন স্ত্রী মৃত্যুবরণ করলে, সে জান্নাতি।” – তিরমিযী: ১১৬৯

(৪৪) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “ধৈর্য জান্নাতের ভান্ডারসমূহের একটি ভান্ডার।” – বায়হাকি

(৪৫) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “ঈমান না এনে তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।” – তারগীব

(৪৬) হযরত আলী (রাঃ) বলেন- “মনে রেখো, তোমার শত্রুর শত্রু, তোমার বন্ধু। আর তোমার শত্রুর বন্ধু, তোমার শত্রু।”

(৪৭) শেখ সাদী (রহঃ) বলেন- “আমি আল্লাহকে সবচেয়ে বেশি ভয় পাই। তারপর সেই মানুষকে ভয় পাই, যে আল্লাহকে মোটেই ভয় পায় না।”

সফলতা নিয়ে ইসলামিক উক্তি

মুসলিমদের দুনিয়াতে সফলতা বলতে কিছুই নেই। প্রতিটি মুসলিম সেদিনই সফলতা অর্জন করবে যেদিন সে হাশরের ময়দানের বিচারকার্য শেষে পুলসিরাত পার করে জানাতে প্রবেশ করতে পারবে। সফলতা নিয়ে পবিত্র কুরআনের কিছু অনুপ্রেরণামূলক বাক্য এবং ঐতিহাসিক গবেষকদের উক্তি তুলে ধরা হলো:

(৪৮) পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সে-ই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন, যে অধিক তাকওয়াবান। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত।” – (সুরা হুজরাত, আয়াত: ১৩)

(৪৯) সফলতা সম্পর্কে হযরত ওমর (রাঃ) বলেন-  “যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর প্রবল বিশ্বাস রাখে,,, আল্লাহ তা’আলা তাঁর কোনো ইচ্ছা অপূর্ন রাখেন না।”

(৫০) “ইবাদত করা মানুষের অভ্যাসে পরিণত হলে, সফলতা জীবনধারায় পরিণত হয় এবং সহজ হয়ে যায়।”

(৫১) আলী ইবনে আবি তালিব (রাঃ) বলেন- “ধনীদের মধ্যে সবচেয়ে ধনী সেই ব্যক্তি, যে লোভের বন্দী নয়।”

(৫২) এরিস্টটল বলেন- “ব্যর্থ হওয়ার নানা উপায় আছে। কিন্তু, সফল হওয়ার উপায় একটাই। আর তা হলো- কঠোর পরিশ্রম।”

(৫৩) সফলতা সম্পর্কে ভিন্স লম্বারডি বলেন- “সফল মানুষের সাথে ব্যর্থ মানুষের মূল পার্থক্য হলো, তাদের সত্যিকার সফল হওয়ার ইচ্ছা।”

পর্দা নিয়ে ইসলামিক উক্তি

প্রত্যেক মুসলিম নারীর জন্য পর্দা করা ফরজ। পর্দার নির্ধারিত বিধান সম্পর্কে মহান আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কোরআনে ঈমানদার নারীদেরকে তাদের দৃষ্টি সংযত রাখতে ও লজ্জাস্থান হেফাজত করতে বলেছেন। একইসাথে, সাধারণত যা প্রকাশ্য তা ছাড়া তাদের (অন্যান্য) আভরণ প্রকাশ না করতে এবং তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ কাপড় দ্বারা আবৃত করে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পর্দা নিয়ে ইসলামিক উক্তি তুলে ধরা হলো:

(৫৪) মহান আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কোরআনে বলেন- “তারা (মুমিন/ ঈমানদার নারীরা) তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের সাজসজ্জা প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদক্ষেপ না করে।”

(৫৫) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “হে পুরুষগণ! তোমরা নারীদের কাছে কিছু চাইলে পর্দার অন্তরাল হতে চাইবে। এ বিধান তোমাদের এবং তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্র।”

(৫৬) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- যে নারী নিজগৃহ, স্বামীগৃহ, মাতৃগৃহ ছাড়া অন্য কোনো স্থানে পর্দা রাখে না, সে তার ও তার রবের মধ্যকার পর্দা ও লজ্জাশীলতাকে বিদীর্ণ করে দেয়।”

(৫৭) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “যে নারী মাথায় কাপড় ছাড়া চলবে, কিয়ামতের দিন তার একেকটা চুল সাপ হয়ে তাকে কামড়াবে।”

(৫৮) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “নারীরা তাদের ঘরের গোপন কক্ষে সালাত আদায় করা উত্তম।”

মন খারাপ নিয়ে ইসলামিক উক্তি

মন খারাপের সময় অনুপ্রেরণামূলক কিছু উক্তি তুলে ধরা হলো:

(৫৯) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- মানুষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা অক্ষম সেই ব্যক্তি, যে দোয়া করতে অক্ষম (দোয়া করে না)।

(৬০) হযরত সুলাইমান (আঃ) বলেন: সৎ লোক একবার বিপদে পড়লে, আবার উঠতে পারে। কিন্তু, অসৎ লোক বিপদে পড়লে একবারে নিপাত যায়।

(৬১) ড. বিলাল ফিলিপ্স বলেন- “আপনার দুর্বলতাকে শক্তিতে পরিণত করার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ তা’আলা-ই রাখেন। তাই তাঁর কাছেই প্রার্থনা করুন।” 

(৬২) ড. বিলাল ফিলিপ্স বলেন- “কখনো কখনো মানুষ আপনাকে বয়কট করবে, দূরে সরিয়ে দেবে, তবে এগুলোকে পার্সোনালি নিয়ে ভেঙ্গে পড়বেন না। কারণ আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা হয়তো ওদের দিক থেকে দূরে সরিয়ে তাঁর (আল্লাহর) নিজের দিকেই আপনাকে ডাকছেন।

অহংকার নিয়ে ইসলামিক উক্তি

অহংকারীকে মহান আল্লাহ তা’আলা পছন্দ করেন না। অহংকার নিয়ে পবিত্র কুরআনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আয়াত, রাসূল (সাঃ) এর হাদিস ও মনীষীদের উক্তি তুলে ধরা হলো:

(৬৩) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “পৃথিবীতে যারা অন্যায়ভাবে অহংকার প্রকাশ করে, তাদেরকে অবশ্যই আমি আমার নিদর্শনাবলি থেকে বিমুখ করে রাখব।” (সূরা আ‘রাফ)

(৬৪) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “বিপদ কেটে গেলে মানুষ অহংকারী ও উৎফুল্ল হয়ে উঠে।” (সুরা-হুদ, আয়াত:১০)

(৬৫) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “এভাবে আল্লাহ প্রত্যেক গর্বিত, অহংকারীর হৃদয়ে মোহর মেরে দেন।”

(৬৬) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “যার মনে বিন্দু পরিমাণ অহংকার আছে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (সহিহ মুসলিম)

(৬৭) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “অহংকার হচ্ছে, সত্যকে উপেক্ষা করা এবং মানুষকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা।” (সহিহ মুসলিম)

(৬৮) ইমাম গাজ্জালি (রঃ) বলেন- “তিনটি সত্তা মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। লোভ, হিংসা ও অহংকার।”

বন্ধুত্ব নিয়ে ইসলামিক উক্তি

(৬৯) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “একজন ব্যক্তি তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর দ্বীনদারীতা অনুসরণ করে। তাই তোমাদের মধ্যে কেউ বন্ধুত্ব করার ক্ষেত্রে, সে কার সাথে বন্ধুত্ব করছে তা যেন লক্ষ্য করে।”

(৭০) হযরত সােলায়মান (আঃ) বলেন- “সম্পদে বন্ধু আকর্ষণ করে। দরিদ্র মানুষ আত্মীয়ের নিকটও প্রত্যাখ্যাত হয়। গুণের আকর্ষণে যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়, তা-ই সাধারণত স্থায়ী হয়।”

(৭১) হযরত আলী (রাঃ) বলেন- নির্বোধের বন্ধুত্ব থেকে দূরে থাক। কারণ, সে তােমার উপকার করতে চাইলেও তার দ্বারা তােমার ক্ষতি হয়ে যাবে।

(৭২) হযরত আলী (রাঃ) বলেন- “বন্ধুর শক্রর সাথে মিত্রতা করো না, তাতে বন্ধু হারাবে।”

(৭৩) বন্ধুত্ব সম্পর্কে এরিষ্টটল বলেন- “প্রত্যেক নতুন জিনিসকেই উৎকৃষ্ট মনে হয়। কিন্তু বন্ধুত্ব যতই পুরাতন হয়, ততই উৎকৃষ্ট ও দৃঢ় হয়।”

(৭৪) এরিষ্টটল বলেন- “যে সবার বন্ধু হয় সে, সে আসলে কারােরই প্রকৃত বন্ধু নয়।”

(৭৫) ডগলাস জেরল্ড বলেন- “আদর্শবান লােকদের বন্ধুর সংখ্যা কম থাকে।”

জীবন নিয়ে ইসলামিক উক্তি

(৭৬) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “আল্লাহ কোন আত্মাকেই তার সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা দেন না।” (সূরা বাকারা, আয়াত: ২৮৬)

(৭৭) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “আর দুনিয়ার জীবন, খেল-তামাশা ছাড়া কিছুই না।” (সূরা আনয়াম, আয়াত: ৩২)

(৭৮) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “সে ব্যক্তি মুমিন নয়, যে নিজে তৃপ্তি সহকারে আহার করে, অথচ তার প্রতিবেশী অনাহারে থাকে।”

(৭৯) হযরত আলী (রাঃ) বলেন- “জীবন হোক কর্মময়, নিরন্তর ছুটে চলা। চিরকাল বিশ্রাম নেয়ার জন্য তো কবর পড়েই আছে।”

(৮০) হযরত আলী (রাঃ) বলেন- “পূর্ণ অর্জন করা অপেক্ষা পাপ বর্জন করা শ্রেষ্ঠতর।”

হতাশা নিয়ে ইসলামিক উক্তি

হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তির জন্য পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তা’আলা বেশ কয়েকটি আয়াত উল্লেখ করেছেন:

(৮১) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “বলো, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছো, তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ হইতে নিরাশ হইও না; নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা যুমার, আয়াত: ৫৩)

(৮২) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “তোমরা হীনবল হইও না এবং দুঃখিতও হইও না; তোমরাই বিজয়ী যদি তোমরা মু’মিন হও।” (সূরা আল-ইমরান, আয়াত: ১৩৯)

(৮৩) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “আল্লাহ্ এমন নন যে, তুমি তাদের মধ্যে থাকবে, অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি দিবেন, এবং আল্লাহ্ এমনও নন যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি দিবেন।” (সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ৩৩)

(৮৪) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “আমি যখন মানুষকে নেয়ামত দান করি, তখন সে মুখ ফিরিয়ে নেয় ও দূরে সরে যায়। আর তাকে কোন অনিষ্ট স্পর্শ করলে, সে হতাশ হয়ে পড়ে।” (সুরা বনী ইসরাইল, আয়াত: ৮৩)

সন্তান নিয়ে ইসলামিক উক্তি

(৮৫) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “কোন মানুষ তখন মৃত্যুবরণ করে, তখন তার আমল তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে; কিন্তু ৩টি বিষয় ছাড়া। (১) অবিরত সাদকা, (২) উপকারী জ্ঞান, (৩) সৎকর্মশীল সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে।” সহিহ মুসলিম

(৮৬) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “জান্নাতে একজন ব্যক্তির স্তর উন্নীত করা হলে সে প্রশ্ন করবে এই মর্যাদা কিভাবে অর্জিত হলো? তাদের বলা হবে, তোমার সন্তান তোমার জন্য ইস্তিগফার করার কারনে।” (ইবনে মাজাহ: ৩৬৬০)

(৮৭) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “সন্তান (নবজাতক) তার নামে পরিচিত হবে, যার শয্যায় সে ভূমিষ্ট হয়েছে।”

(৮৮) আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেন- “প্রত্যেক নবজাতক ফিতরাতের ওপর (সত্যের উপর) জন্মগ্রহণ করে, অতঃপর তার বাবা-মা তাকে ইহুদী, খ্রীস্টান কিংবা মাজূসী বানায়।” (বুখারী: ১৩৫৮, মুসলিম: ২৬৫৮)

(৮৯) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “আর ব্যক্তি তার ঘরের লোকেদের ওপর রক্ষণাবেক্ষণকারী এবং সে তাদের ব্যাপারে দায়িত্বশীল। এবং নারী তার স্বামীর ঘর এবং তার সন্তানের রক্ষণাবেক্ষণকারী এবং সে তাদের ব্যাপারে দায়িত্বশীল।” (বুখারী: ৮৯৩, মুসলিম: ১৮২৯)

স্বামী স্ত্রী নিয়ে ইসলামিক উক্তি

(৯০) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “স্বামীর উপর স্ত্রীর অধিকার এই যে, স্বামী তার খাবার, পোশাক-পরিচ্ছদ, বাসস্থান এবং আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র সরবরাহ করবে।”

(৯১) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “স্ত্রীদের যা কিছু পাওনা আছেছে, তা উত্তম আচরণের মাধ্যমে পৌছে দাও। আর তাদের উপরে পুরুষদের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।”

(৯২) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “তোমাদের মধ্যে তারাই উত্তম ব্যক্তি, যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম। আর আমি আমার স্ত্রীদের কাছে তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি।”

(৯৩) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “যে স্ত্রী অল্পতেই সন্তুষ্ট, সে স্ত্রী রমণীদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম।”

(৯৪) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “ধার্মিক স্ত্রী মানুষের সর্বাপেক্ষা মূল্যবান রত্ন।”

(৯৫) হযরত ওমর (রাঃ) বলেন- “ঈমানের পর চরিত্রবান স্ত্রী লাভ করা বিরাট বড় নেয়ামত।”

(৯৬) হযরত আলী (রাঃ) বলেন- “পৃথিবীতে সবচেয়ে সুখী মানুষ হচ্ছে সে, যে একজন নেককার স্ত্রী পেয়েছে।

ধৈর্য নিয়ে ইসলামিক উক্তি

(৯৭) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “আমি অবশ্যই তোমাদেরকে কিছু না কিছু দিয়ে পরীক্ষায় ফেলবোই; তোমাদেরকে বিপদের আতঙ্ক, ক্ষুধার কষ্ট, সম্পদ, জীবন, পণ্য-ফল-ফসল হারানোর মধ্য দিয়ে। আর যারা কষ্টের মধ্যেও ধৈর্য-নিষ্ঠার সাথে চেষ্টা করে, তাদেরকে সুসংবাদ দাও।” (সূরা বাকারাহ, আয়াত: ১৫৫)

(৯৮) মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছ, শোনো: ধৈর্য-নিষ্ঠার সাথে চেষ্টা করো এবং সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। যারা ধৈর্য-নিষ্ঠার সাথে চেষ্টা করে, আল্লাহ অবশ্যই তাদের সাথে আছেন।”

(৯৯) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “ধৈর্য এমন একটি গাছ, যার সারা গায়ে কাটা; কিন্তু ফল অতি সুস্বাদু।”

(১০০) “জীবনের কঠিন পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো শক্তি দিয়ে নয়, বরং ধৈর্য দিয়ে সম্পন্ন করতে হয়।”

(১০১) “ধৈর্যশীল ব্যক্তরা শান্তিতে থাকে। কেননা তারা জানে যে, আল্লাহ তাদের উত্তম প্রতিদান দিবেন।”

শেষকথা

উপরোক্ত লেখাটিতে দৈনন্দিন জীবনের সকল প্রকার পরিস্থিতির সাথে যুক্ত ১০০+ ইসলামিক উক্তি তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি, আপনার কাঙ্খিত ও পছন্দের উক্তিগুলো খুঁজে পেয়েছেন।

Scroll to Top