পর্দা নিয়ে স্ট্যাটাস – পর্দা নিয়ে ইসলামিক উক্তি | মুসলিম নারীদের জীবনের সাথে পর্দা করার বিষয়টি ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। শুধুমাত্র নারীদের জন্যই নয়, পুরুষদের জন্যও রয়েছে পর্দার বিধান।
আমরা অনেক সময় বিভিন্ন পর্দা নিয়ে স্ট্যাটাস, ইসলামিক উক্তি ও ক্যাপশনের মাধ্যমে অন্যকে পর্দা করতে উৎসাহিত করতে চাই। তাই এই আর্টিকেলে আপনাদের জন্য পর্দা নিয়ে স্ট্যাটাস, পর্দা নিয়ে ইসলামিক উক্তি, হাদিস, পবিত্র কুরআন এর আয়াতের অর্থ ও ক্যাপশন সমূহ তুলে ধরা হলো।
পর্দা নিয়ে স্ট্যাটাস
(১)
যখন একজন মা/ একজন বোন পর্দা পরিধান করে,,,
প্রকৃতপক্ষে সে দুনিয়া থেকে আবৃত হয়
এবং আখিরাতের জন্য সুসজ্জিত হয়ে উঠে।
(২)
পর্দা করলে যদি আপনাকে আরো বেশি সুন্দর লাগে,,
তাহলে সেটা পর্দা নয়।
পর্দার উদ্দেশ্য থাকতে হবে এইরকম —
যেন বোঝা না যায়
পর্দার ভেতরে ১৬ বছরের কিশোরি নাকি ৬০ বছরের বয়স্কা আছেন।
(৩)
হে বোন সারাদিন গলায় ঝুলে থাকা ওড়নাটি,,,
আযানের সময় মাথার উপরে দেওয়ার মাঝে
কোন সফলতা নেই!!!
পর্দা কখনো আযানের জন্য হয় না,,
পর্দা হয় নয় সারাদিন ব্যাপী এবং নিজের জন্য।
(৪)
তোমরা সেই নারী যারা ভালোভাবে যদি আল্লাহ্র তাকওয়া অবলম্বন করতে পারে তাহলে তোমরা জান্নাতি হুরের থেকেও বেশি সুন্দরী হবে।
(৫)
পুরুষেরা যদি নারীদের কিছু চায় তাহলে অবশ্যই পর্দার অন্তরাল থাকতে হবে।
এই বিধানটি পুরুষগণ ও নারীগণ উভয়ের জন্য মঙ্গলকর এবং অধিক পবিত্র।
(৬)
পর্দা হলো এমন একটি ইবাদত,
যা আল্লাহ তা’য়ালার সন্তুষ্টির জন্য যথাযথ নিয়মে করতে হবে।
সুতরাং মা বোনেরা দয়াকরে এটাকে কখনও ফ্যাশান বানিয়ে ফেলবেন না।
(৭)
পর্দা শুধু নারীর ইজ্জত বা সম্মানকেই রক্ষা করে না,,,
বরং লক্ষ্য কোটি যুবককে জাহান্নামের কঠিন আগুন থেকে রক্ষা করে।
আল্লাহ তা’আলা আমাদের বোঝার জ্ঞান দান করুক, আমিন।
আরও পড়ুনঃ
- রমজান নিয়ে স্ট্যাটাস, ক্যাপশন ও উক্তি
- অসুস্থতা নিয়ে ইসলামিক স্ট্যাটাস, উক্তি, ক্যাপশন ও হাদিস
- জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস বাংলা | Jumma Mubarak Status Bangla
পর্দা নিয়ে ক্যাপশন
(১)
পর্দা করলে এমন ভাবে করতে হবে,,,
যেন সে পর্দাশীল ব্যক্তিকে – আকর্ষণীয় না লাগে।।
মনে রাখতে হবে পর্দা করা হয় —-
সৌন্দর্যকে লুকিয়ে রাখার জন্য,,,
প্রকাশ করার জন্য নয়।
(২)
সূর্য যেমন মেঘের মধ্যে ঢাকা পড়লে,,
তার সৌন্দর্য হারায় না।
ঠিক তেমনি একজন পর্দাশীল নারী পর্দা করলে,,,
তার সৌন্দর্য কমে না বরং বাড়ে।
(৩)
যে নারী নিজগৃহ, স্বামীগৃহ এবং মায়ের বাড়ি ছাড়া
অন্য স্থানগুলোতে পর্দা বজায় রাখে না।
সেই নারী যেন তার ও তার রবের মধ্যকার
পর্দা ও লজ্জাশীলতাকে বিদীর্ণ করে দেয়, নাউজুবিল্লাহ।
(৪)
যেদিন আরশের ছায়া ছাড়া,,
আর কোন ছায়া থাকবে না।
সেদিন একজন নারী দুনিয়াতে পর্দার কারনে সেই ছায়ার অধিবাসী হয়ে উঠতে পারে।
(৫)
বাড়ির পর্দাগুলোর রং কিছুটা ফ্যাকাশে হয়ে গেছে,
তাই ভাবছি এগুলো বদলে নেবো।
নয়তো এগুলো দেখে নিজের মনেও যেন
পর্দার উদ্যমের অভাব অনুভূত হয়।
(৬)
বর্তমানে পর্দা করতে চাইলে প্রায় প্রতিটি নারীকেই পরিবার ও সমাজে নানানভাবে অমর্যাদার সম্মুখীন হতে হয়।
তবুও যারা মনেপ্রাণে মহান আল্লাহকে ভালোবাসে তারা সবসময় পর্দাশীল অবস্থাতেই থাকে।
(৭)
ইসলামে প্রতিটি নারীর জন্যই পর্দা করা ফরজ।
আল্লাহ তা’আলা সকল নারীকে পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ আদায়ের পাশাপাশি
পরিপূর্ণভাবে পর্দায় থাকতে বলেছেন।
(৮)
কিছু মানুষ পর্দা করে — তাদের শরীরকে আবৃত করার জন্য,,,
কিছু মানুষ পর্দা করে — তাদের মনকে আবৃত করার জন্য,,,
উভয় ক্ষেত্রেই তাদের পছন্দ কে সম্মান করতে হবে
(৯)
যদি পর্দা করতে আপনি লজ্জাবোধ করেন,,,
তাহলে পুরুষদের খারাপ দৃষ্টি যখন আপনার সস্তা দেহের উপর পড়ে,,
তখন কোথায় থাকে আপনার সেই লজ্জা আর আত্নমর্যাদাবোধ।
(১০)
এই প্রচন্ড গরমেও যারা পর্দা করে।
মহান আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে উনার আরশের নিচে ছায়া দিবেন, ঈন-শা-আল্লাহ।
(১১)
আমার কাছে পর্দা-ই সব।
পর্দা-ই আমার প্রথম পছন্দ,
পর্দা-ই মুসলিম হিসেবে আমার পরিচয়।
সকল মুসলিম নারীদেরই আল্লাহর নির্দেশ মেনে,,
পর্দা করা উচিত।
(১২)
পর্দায় আবৃত থাকাটা প্রধানত সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্যকে প্রকাশ করে
তাই আমি পর্দায় থাকতেই পছন্দ করি।
আমাদের সকলেরই উচিত নিজের মর্যাদা ও লজ্জাবোধ ধরে রাখতে পর্দা করা।
(১৩)
কোন এক দ্বীনদার বোন বলেছিলেন,
আমরা রাতের বেলায় ঘুমানোর সময় বোরখা পরিধান করা অবস্থায় ঘুমাতাম।
যাতে করে, রাতে বোমা হামলায় আমাদের মৃত্যু হলেও,
সকাল বেলায় কেউ যেন আমাদের মৃতদেহকে বেপর্দায় না দেখে।
আরও পড়ুনঃ
পর্দা নিয়ে হাদিস
(১)
পুরুষের জন্যও পর্দা রয়েছে। বেশ কিছু হাদিসে তা প্রকাশ হয়। যেমন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “যে পুরুষ অন্য নারীর দিকে দৃষ্টিপাত করে না এবং নিজের দৃষ্টিকে সংযত রাখে, মহান আল্লাহ তাকে বিশেষ পুরস্কার দিবেন।”
(সহিহ মুসলিম)
(২)
পুরুষের পর্দা সম্পর্কে একটি হাদিসে উল্লেখিত হয়, “পুরুষের জন্য শ্রেষ্ঠ হলো, সে তার দৃষ্টি সংযত রাখবে এবং নারীদেরকে সম্মান করবে।”
(আবু দাউদ)
(৩)
“যে নারী মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পর্দা করে,
আল্লাহ তা’আলা তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দেবেন।”
(আবু দাউদ)
(৪)
“যে নারী তার চেহারা এবং দেহকে পর্দার মাধ্যমে আবৃত করে রাখে, সে জান্নাতের পথে চলমান।”
(মুসলিম)
(৫)
“মহান আল্লাহ তা’য়ালা সেই সকল নারীর প্রতি সন্তুষ্ট,
যারা পর্দা রক্ষা করে এবং শালীনভাবে জীবনযাপন করে।”
(তিরমিজি)
পর্দা নিয়ে ইসলামিক উক্তি
(১)
“যে নারী পর্দার মাধ্যমে নিজেকে রক্ষা করে,
সে মহান আল্লাহর প্রতি আস্থা রাখে এবং নিজের সম্মানকে রক্ষা করে।”
(ইমাম শাফেয়ী র.)
(২)
“পর্দা নারীদের স্বাধীনতার একটি মাধ্যম,
এটি তাদেরকে সমাজের অশুভ দৃষ্টি থেকে রক্ষা করে।”
(হাসান আল-বাসরি)
(৩)
“পর্দা হলো নারী ও পুরুষের মধ্যকার,,,
পারস্পরিক সম্মান এবং নৈতিকতার প্রতীক।”
(ইবনে কাসির র.)
(৪)
দাড়ির সাথে পুরুষ এবং পর্দার সাথে নারী-
এটাকে সবচেয়ে ভালো সমন্বয় বলা যায়।
(সংগৃহীত)
(৫)
পর্দা হলো কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত পছন্দ।
এটি ফ্যাশনের জন্য না পরে —
স্রষ্টার প্রতি আনুগত্যের জন্য পরা উচিত।
এটি মানুষকে দেখানোর জন্য না পরে —
বরং স্রষ্টার নৈকট্য পাবার জন্য পরা উচিত।
(ইয়াসমিন অ্যামগেহেদ)
পর্দা নিয়ে কোরআনের আয়াত
(১)
সূরা আন-নূর এর ৬১ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, “যারা নিজেদের সৌন্দর্য ও সজ্জা প্রকাশ করে, তারা যেন পর্দা মেনে চলে, কারণ এটি তাদের জন্য কল্যাণকর।”
(২)
সূরা আন-নূর এর ৩০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, “মু’মিন পুরুষদেরকে বলুন, তাহারা যেন তাহাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাহাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে; ইহাই তাহাদের জন্য উত্তম। উহারা যাহা করে নিশ্চয় আল্লাহ্ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত।”
(৩)
সূরা আন-নূর এর ৩০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, “আর মু’মিন নারীদেরকে বল, তাহারা যেন তাহাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাহাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে; তাহারা যেন যাহা সাধারণত প্রকাশ থাকে তাহা ব্যতীত তাহাদের আভরণ প্রদর্শন না করে, তাহাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে, তাহারা যেন তাহাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, আপন নারীগণ, তাহাদের মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনা – রহিত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ব্যতীত কাহারও নিকট তাহাদের আভরণ প্রকাশ না করে, তাহারা যেন তাহাদের গোপন আভরণ প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদক্ষেপ না করে। হে মু’মিনগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যাহাতে তোমরা সফলকাম হইতে পার।”
(৪)
সূরা আল-আহযাব এর ৩৩ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, “আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করিবে এবং এবং পূর্বের অজ্ঞতার যুগের নারীদের মতো নিজেদেরকে প্রদর্শন করিয়া বেড়াইবে না।”
(৫)
সূরা আল-আহযাব এর ৩৩ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, “হে নবী ! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে, কন্যাগণকে ও মু’মিনদের নারীগণকে বল, তাহারা যেন তাহাদের চাদরের ক্রিয়দংশ নিজেদের উপর টানিয়া দেয়। উহাতে তাহাদেরকে চেনা সহজতর হইবে, ফলে তাহাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”
শেষকথা
এই ছিল পর্দা নিয়ে স্ট্যাটাস – পর্দা নিয়ে ইসলামিক উক্তি ও ক্যাপশন গুলো। এগুলো থেকে আমাদের অনেক কিছুই শেখার আছে।