ধর্ষণ নিয়ে উক্তি, স্ট্যাটাস, ক্যাপশন, প্রতিবাদী স্লোগান ও কবিতা 

ধ’র্ষণ নিয়ে উক্তি, স্ট্যাটাস, ক্যাপশন, প্রতিবাদী স্লোগান ও কবিতা 

ধ’র্ষণ নিয়ে উক্তি – ধ’র্ষণ নিয়ে ক্যাপশন | ধ’র্ষণ হলো বর্তমান বিশ্বের মানবতা বিরোধী সবচেয়ে বড় ব্যাধি গুলোর একটি। ধ’র্ষ’ণের মাধ্যমে একজন নারীকে সবচেয়ে কঠিন মানসিক কষ্ট দেওয়া হয়। কিন্তু এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত অপরাধীর জন্য উপযুক্ত শাস্থি প্রয়োগ করা হয়না।

ধ’র্ষণের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও নিন্দা জানাতে এবং প্রতিবাদ করতে আমরা অনেক সময় সোস্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন পোস্ট করে থাকি। এমন পোস্টের জন্য এখানে বাছাই করা কিছু ধ’র্ষণ নিয়ে উক্তি, স্ট্যাটাস, ক্যাপশন, প্রতিবাদী স্লোগান ও কবিতা সমূহ তুলে ধরা হলো।

ধ’র্ষণ নিয়ে উক্তি

১.

ধ’র্ষণ শুধু শরীর নয়, মন, আত্মা আর বিশ্বাসকে হত্যা করে।

যারা এটা করে, তারা শুধু আইনভাঙা অপরাধী নয় — তারা মানবতার উপর জুলুম মারা কাপুরুষ।

২.

একজন ধর্ষিতার কান্না শোনার মতো শক্তি আমাদের সমাজের নেই, অথচ ধর্ষকের মুখ রক্ষায় সব ব্যস্ত।

এই ন্যায়ের অভাবটাই আজ সবচেয়ে ভয়ংকর।

৩.

ধ’র্ষণ হলো সেই অপরাধ, যেখানে ভিকটিমকে প্রশ্ন করা হয়, আর অপরাধীকে অজুহাত খুঁজে দেয়া হয়।

এর চেয়ে বড় অন্যায় আর কিছু হতে পারে না।

৪.

কোনো পোশাক, কোনো সময়, কোনো অবস্থাই ধ’র্ষণের জন্য দায়ী নয়।

দায়ী শুধু সেই মন, যা নিজের লালসাকে মানুষের সম্মানের উপর চাপিয়ে দেয়।

৫.

ধ’র্ষণ শুধু মুহূর্তের ঘটনা নয়, এটা একজন নারীর জীবনের প্রতিটি নিঃশ্বাসকে বিষিয়ে দেয়।

আমরা শুধু শোক করি, প্রতিরোধ করতে শিখি না।

৬.

যে সমাজ ধ’র্ষণকে ‘দুর্ভাগ্য’ বলে পাশ কাটায়, সেই সমাজই অপরাধীকে শক্তি দেয়।

নীরবতা কখনো প্রতিরোধ নয়, বরং অপরাধের নিরব অনুমোদন।

৭.

ধ’র্ষণ কখনো কেবল একজন নারীর প্রতি নয় — এটা গোটা মানবতার প্রতি আঘাত।

যে অপরাধের পরেও মুখ চেপে রাখা হয়, তা সমাজকে ভেতর থেকে পঁচিয়ে দেয়।

৮.

একজন ধর্ষকের জন্য কয়েক মিনিট, একজন ভিকটিমের জন্য সারাজীবন।

বিচারহীনতা ধ’র্ষণের উৎস নয় — আমরা যারা চুপ থাকি, তারাও সেই অপরাধের অংশীদার।

৯.

ধ’র্ষণ বন্ধ করতে হলে শুধু আইন নয়, প্রয়োজন চিন্তা পাল্টানো।

মেয়েদের শেখানোর আগে ছেলেদের শেখানো জরুরি — নারী কোনো বস্তু নয়, সে মানুষ।

১০.

ধ’র্ষণ নিয়ে যারা মজা করে, ব্যঙ্গ করে, অথবা ‘দোষ খোঁজে’ — তারা ধর্ষকের চেয়ে কম ভয়ংকর নয়।

ভাষা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ছাড়া মুক্তি সম্ভব নয়।

আরও পড়ুনঃ

ধ’র্ষণ নিয়ে স্লোগান | ধ’র্ষণের প্রতিবাদে স্লোগান

১.

ধ’র্ষণ শুধু নারীর প্রতি না, এটা মানবতার উপর আঘাত।

আজ যদি তুমি চুপ থাকো, কাল এই নীরবতা তোমার প্রিয়জনের কান্নায় পরিণত হবে।

২.

ধ’র্ষণ রুখতে হলে কেবল আইন নয়, আমাদের মানসিকতাই বদলাতে হবে।

নারীকে মানুষ হিসেবে দেখো — তার হাসি, চলাফেরা বা পোশাক নয়, সম্মতিই সবকিছু।

৩.

কোনো পোশাক, সময় বা চলাফেরা নয় — ধ’র্ষণের দায় একমাত্র ধর্ষকের।

ভিকটিম নয়, অপরাধীকেই প্রশ্ন করো, তবেই সমাজ বদলাবে সত্যিকার অর্থে।

৪.

ধ’র্ষণ কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটা এক পরিকল্পিত পাশবিকতা।

যাকে তুমি ছোট ঘটনা ভাবছো, সেটা কারো সারাজীবনের অভিশপ্ত দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকে।

৫.

তোমার নীরবতা অপরাধীদের আশ্রয় দেয়। প্রতিবাদ করো, আওয়াজ তুলো — কারণ আজ যারা চুপ থাকছে, কাল তারাও হয়তো এই অন্যায়ের শিকার হবে।

৬.

ধর্ষকের পরিচয় ধর্ম, পেশা বা বয়সে নয় — সে অপরাধী, তাই তার বিচার চাই।

অপরাধীর পক্ষ না নিয়ে, সাহস করে দাঁড়াও সত্য আর ন্যায়ের পাশে।

৭.

নারী কোনো বস্তু নয়, তার সম্মতিই তার অধিকার।

তার ‘না’ মানেই ‘না’ — এই সহজ সত্য না শেখালে ধ’র্ষণ থামবে না কখনোই।

৮.

যে সমাজ ধর্ষকের চেয়ে ভিকটিমের চরিত্র খোঁজে, সে সমাজ সবচেয়ে বড় অপরাধী।

ন্যায়ের পাশে দাঁড়াও, না হলে অন্যায়ের সহচর হয়ে যাবে।

৯.

একজন ধর্ষিতা নয়, গোটা সমাজ ধ’র্ষণের শিকার হয় — যখন আমরা অপরাধীর মুখ দেখি না, বরং ভুক্তভোগীকে লজ্জা দিই তার জোর করে ছিনিয়ে নেওয়া মর্যাদার জন্য।

আরও পড়ুনঃ 

ধ’র্ষণ নিয়ে ক্যাপশন

১.

ধ’র্ষণের বিচার শুধু আদালতে নয়, সমাজেও হওয়া দরকার।

একজন ভুক্তভোগীকে বোঝো, সম্মান দাও — কারণ সে কোনো দোষে দোষী নয়, সে অন্যায়ের শিকার।

২.

কেউ যখন জোর করে ভালোবাসার নাম নেয়, সেটা ভালোবাসা নয়, সেটা পাশবিকতা।

ধ’র্ষণ কোনো দয়া নয়, এটা নারীজীবনের চরম অবমাননা।

৩.

নারীর পোশাক নয়, সমস্যাটা পুরুষের মানসিকতায়।

মানসিকতার বদল ছাড়া কোনো আইন, কোনো শাস্তিই ধ’র্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধ থামাতে পারবে না।

৪.

ধ’র্ষণ শেষে তুমি আদালতে জিতলেও মন হারিয়ে যায় চিরতরে।

এ এক যন্ত্রণা, যা বাইরে বোঝা যায় না, ভেতরটা শুধু নিঃশব্দে কাঁদে।

৫.

ধ’র্ষণ কোনো হঠাৎ ঘটনার ফল নয় — এটা সমাজের বহুদিনের অসংবেদনশীলতা, নীরবতা আর মানসিক বিকৃতির ফসল।

প্রতিবাদ করো, নয়তো তুমি নিজেই ভিকটিম হতে পারো।

৬.

ধ’র্ষণের পর একজন নারী বেঁচে থাকলেও, সে আর স্বাভাবিকভাবে বাঁচে না।

সমাজ তাকে ভাঙে বারবার, অথচ অপরাধীকে অনেক সময় প্রশ্রয়ই পায়।

৭.

ধ’র্ষণকারীরা শুধু নারীর জীবনে অন্ধকার নামিয়ে আনে না, আমাদের সভ্যতার মুখেও কালি ছিটায়।

তাদের জন্য করুণা নয়, চাই কঠোর বিচার।

৮.

প্রতিবার ধ’র্ষণের পর শুধু একজন নারী কাঁদে না — তার পরিবার, তার ভবিষ্যৎ, তার আত্মবিশ্বাস, তার স্বপ্ন — সবকিছু মিলেই একটি জীবন নিঃশেষ হয়ে যায়।

৯.

একজন ধর্ষকের মুখ সমাজ যতবার আড়াল করে, ততবার নতুন একজন বিকৃত মানসিকতার মানুষ জন্মায়।

অপরাধীর পরিচয় গোপন নয়, প্রকাশ হোক ন্যায়ের জন্য।

ধ’র্ষণ নিয়ে কবিতা | ধ’র্ষণ নিয়ে প্রতিবাদী কবিতা

১.

চোখে তার ছিল ভয়, অথচ মুখে ছিল চুপ,

ভাঙা আত্মার শব্দ কেউ শোনেনি, কেউ বুঝেনি দুঃখ।

সে কেঁদেছিল রাতভর,

সমাজ তাকে প্রশ্ন করেছিল—

অপরাধীর নাম তখনও ছিল রক্ষা করা মুখ।

২.

আমি নারী, কিন্তু প্রথমেই আমি মানুষ,

আমার শরীর তোমার লালসার বস্তু নয়।

আমার না মানে না—

এই সহজ সত্য যদি বুঝতে না পারো,

তবে মানুষ হওয়া তোমার অযোগ্যতা।

৩.

ধ’র্ষণ শুধু দেহ নয়, হত্যা করে আত্মা,

তারপর সমাজ মুখোশ পরে খোঁজে ভুক্তভোগীর দোষ।

পোশাক, হেঁটে চলা—

সব প্রশ্ন মেয়েটির দিকে,

অথচ অপরাধী হেঁটে চলে বুক ফুলিয়ে।

৪.

শুধু কান্না নয়, আমি ন্যায়ের দাবিতে দাঁড়িয়েছি,

ভাঙা শরীর নয়, আমার মনটাই বেশি ক্ষতবিক্ষত।

আমি শিকার নই, আমি প্রতিবাদের কণ্ঠ,

এই পৃথিবী বদলাতে —

আমাকে নীরব থাকতে বলা যাবে না।

৫.

রাতটা থেমে গিয়েছিল সেদিন,

সে আর কোনোদিন আগের মতো হাসে না।

ধ’র্ষণ তাকে কেড়ে নিয়েছে,

আমরা শুধু দেখি খবরের শিরোনামে—

একজন মেয়ে, আরেকটি গল্প, আবারও ন্যায়ের অভাব।

৬.

আমি জানি সে কে—

সে আমার পাশের মেয়েটা, আমার ছোট বোন,

তার কান্না শুনেছি দেয়ালের ওপাশে।

ধর্ষক শুধু একা নয়,

তার সাথী হয় সমাজের হাজারো চুপ করে থাকা চোখ।

ধ’র্ষণ নিয়ে স্ট্যাটাস

১.

ধ’ণ কোনো ভুল নয়, এটা এক নির্মম পৈশাচিকতা।

আর যেদিন সমাজ ধর্ষকের মুখ লুকানো বন্ধ করবে, সেদিন থেকে শুরু হবে প্রকৃত ন্যায়বিচারের সূচনা।

২.

ধ’র্ষণের শিকার নারী নয়, অপরাধীকে নিয়ে লজ্জা পাওয়ার কথা।

একজন নিরপরাধ মানুষকে প্রশ্ন না করে সমাজ যদি অপরাধীকে চুপচাপ সহ্য করে — তবে সেটা নীরব অপরাধ।

৩.

যে সমাজ নারীর কান্নাকে গুজব ভাবে, সেই সমাজের বিবেক মৃত।

ধ’র্ষণ শুধু শারীরিক আঘাত নয়, এটা পুরো জীবনের বুকে কেটে রাখা এক স্থায়ী ক্ষতচিহ্ন।

৪.

ধ’র্ষণ যে মুহূর্তে ঘটে, সেই মুহূর্তেই থেমে যায় একজন নারীর স্বাভাবিক জীবন।

সমাজ তার শরীর না দেখে মনটা দেখলে হয়তো কিছুটা মানবতা বাঁচতো।

৫.

ধ’র্ষণ একটা নারীর না বলা চিৎকার, যা শুনতে সবাই ব্যর্থ হয়।

তার চোখের ভেতর প্রতিদিন মরে যায় আশা, আত্মবিশ্বাস আর সাহসের কিছু কিছু অংশ।

৬.

নারীকে ভালোবাসা শেখাও, অধিকার শেখাও — উপভোগ নয়।

ধ’র্ষণ যারা করে, তারা শুধু আইন ভাঙে না, তারা মানুষের রূপে পশুত্বের সবচেয়ে কুৎসিত রূপ প্রকাশ করে।

About Sajjad Hossain