রাজশাহী বিভাগের দর্শনীয় স্থান

রাজশাহী বিভাগের সকল জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ 

রাজশাহী বিভাগ বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের মধ্যে প্রাচীন ইতিহাস ও অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ একটি বিভাগ। রাজশাহী বিভাগের আওতাধীন রয়েছে রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, নাটোর, জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলা। প্রতিটি জেলাতেই রয়েছে প্রাচীন-ঐতিহাসিক স্থাপনা, মসজিদ, অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিল, দিঘী, গাছপালা ঘেরা পার্ক, চিড়িয়াখানা এবং আধুনিক ও নান্দ্যনিকভাবে নির্মিত রিসোর্ট এবং বিনোদনকেন্দ্র। ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য, রাজশাহী বিভাগের সকল জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহের প্রয়োজনীয় তথ্য, অবস্থান ও দর্শনযোগ্যতার পটভূমি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এই লেখা থেকে।

রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

সাফিনা পার্ক (Safina Park)

সাকিনা পার্ক রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার দ্বিগ্রাম খেজুরতলায় প্রায় ৪০বিঘা জমির উপর ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলা একটি বিনোদন পার্ক। ২০১২ সালে গোদাগাড়ী থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে এই পার্টি গড়ে তোলা হয়েছে। সকল বয়সী দর্শনার্থীদের কাছে চিত্তবিনোদন ও পিকনিক স্পট হিসেবে নানারকম ফুল, ফল ও ঔষধি গাছ দিয়ে ঘেরা এই পার্কটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এখানে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা এবং কৃত্রিম উপায়ে তৈরিকৃত পশুপাখির আকর্ষণীয় ভাস্কর্য। সাথে রয়েছে ২টি লেক এবং বিভিন্ন প্রকার বিনোদনমূলক রাইড।

শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা (Martyrs Memorial Museum)

শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা হলো দেশের উত্তরাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ প্রান্তরে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সংগ্রহ নিয়ে গড়ে ওঠা একটি ঐতিহাসিক স্মৃতি কেন্দ্র। ১৯৭৬ সালে তরুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করতে এই সংগ্রহশালাটি তৈরি করা হয়েছিল। এটি প্রায় ৬,৬০০ বর্গফুট জায়গা নিয়ে চমৎকার স্থাপত্যে নৈপূন্যে গড়া একটি সংগ্রহশালা। এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত পোশাক, সরঞ্জাম, মুক্তিযোদ্ধাদের আলোকচিত্র ও ছবি, বুদ্ধিজীবীদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র এবং নানান ভাস্কর্য রয়েছে।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা (Rajshahi Central Zoo)

রাজশাহী শহর থেকে ৪.২ কিলোমিটার দূরে পদ্মার তীর ঘেঁষে একসময়ের রেসকোর্স ময়দানের ৩২.৭৬ একর জায়গা জুড়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা গড়ে তোলা হয়েছে। ১৯৭২ সালে এই চিড়িয়াখানা নির্মাণ কাজ শুরু হলে, ১৯৭৪-৭৬ সালে রাজস্ব বিভাগের অনুমতিক্রমে এখানে একটি শিশু পার্কও নির্মিত হয়। সবুজ প্রকৃতির নিবিড় ছায়ায় ঘেরা এই চিড়িয়াখানায় রয়েছে ঘোড়া, হরিণ, বাজরিকা, বালিহাঁস, উদবিড়াল, অজগর সাপ ও কুমিরসহ বিভিন্ন জলজ ও স্থলজ প্রাণী। 

পুঠিয়া রাজবাড়ী (Puthia Rajbari)

পুঠিয়া রাজবাড়ী রাজশাহী বিভাগীয় শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে নজরকারা স্থাপত্যের একটি অনন্য নিদর্শন। ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলী অনুসরণ করে উনবিংশ শতাব্দীতে পুঠিয়া রাজবাড়ী নির্মিত হয়। বর্তমানে এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে লস্করপুর ডিগ্রী কলেজ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি পরিখা। যেমন- শিবসাগর, বেকিচৌকি, মরাচৌকি, গোপালচৌকি, গোবিন্দ সরোবর ইত্যাদি। প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত এটি শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন অঞ্চলের দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে।

বাঘা মসজিদ (Bagha Mosque)

বাঘা মসজিদ রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইট দিয়ে তৈরি একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। এই মসজিদের চারপাশে ৪টি এবং মাঝখানে দুই সারিতে মোট ১০ টি গম্বুজ রয়েছে। মসজিদের ভেতরে এবং বাহিরে রয়েছে অসংখ্য পোড়ামাটির ফলক। মসজিদের ভেতরে উঁচু বেদিতে রয়েছে একটি বিশেষ নামাজের কক্ষ। মসজিদের পূর্ব পাশে একটি বিশাল দিঘী এবং অন্য পাশে একটি কবরস্থানও রয়েছে। ঐতিহাসিক এই স্থাপত্যটি পরিদর্শনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসেন বহু দর্শনার্থী।

সিরাজগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ 

রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি (Rabindra Kachari House)

রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি হচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈত্রিক জমিদার বাড়ি, যা সিরাজগঞ্জ জেলা সদর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে শাহজাদপুর উপজেলায় অবস্থিত। অষ্টাদশ শতাব্দীতে এই বাড়িটি নীলকুঠি হিসেবে ব্যবহার করা হতো। ১৮৪২ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ইংরেজদের কাছ থেকে নিলামে এই বাড়িতেই ক্রয় করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানে ১৮৯০-১৮৯৬ সাল পর্যন্ত জমিদারিত্ব করেছিলেন। এটি প্রায় ১০ বিঘা জমির উপর ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলীতে তৈরি। রবীন্দ্রনাথের শৈশব, কৈশোর ও যৌবনকালের নানান ছবি ও ব্যবহৃত আসবাবপত্র রয়েছে এখানে।

চায়না বাঁধ (China Dam)

চায়না বাদ সিরাজগঞ্জ জেলা শহর থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক যমুনা নদীর কূলে নির্মিত একটি বাঁধ। দুই পাশে নদী আর মাঝখানে সবুজ ঘাসের গালিচায় অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের উপভোগ করা যায়। বাঁধের মূল গেইট থেকে যমুনা নদীর দুই কিলোমিটার গভীর পর্যন্ত বাঁধের স্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছে। শক্তিশালী এই বাঁধের উপর দিয়ে চলে গেছে কালো পিচ ঢালা রাস্তা। এখানে চারপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশ আর নৌকা ভ্রমণের সুযোগ প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।

বঙ্গবন্ধু যমুনা ইকোপার্ক (Bangabandhu Yamuna Ecopark)

বঙ্গবন্ধু যমুনা ইকোপার্ক সিরাজগঞ্জ জেলার একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র। ২০০৭ সালে বাংলাদেশের বন বিভাগ বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে প্রায় ১২০ এরপর জায়গা নিয়ে এই পার্টি প্রতিষ্ঠা করে। সমগ্র পার্ক জুড়ে রয়েছে বহু রকমের ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছপালা। প্রকৃতির এই নিবিড় মায়ায় সবুজের সমান হয়ে বসবাস করছে কাঠবিড়ালি, হরিণ, ময়ূর, খরগোশ, সাজারু, বানর ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।

বঙ্গবন্ধু যমুনা ইকোপার্ক

যমুনা সেতু (Yamuna Bridge)

যমুনা সেতু বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের ভুয়াপুর ও পশ্চিমাঞ্চলের সিরাজগঞ্জ জেলার সাথে সংযোগ স্থাপনকারী একটি বহুমুখী সেতু। এটি বঙ্গবন্ধু সেতু নামেও পরিচিত। ১৯৯৮ সালের জুন মাসে দক্ষিণ এশিয়ার ষষ্ঠ বৃহৎ এবং বিশ্বের ১১তম দীর্ঘতম এই সেতুটি উদ্বোধন করা হয়। এর দৈর্ঘ্য ৪.৮ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮.৫ মিটার। যানবাহন ও ট্রেন চলাচলের জন্য এখানে রয়েছে চারটি লেন সড়ক ও ২টি রেল ট্রেক। নদীমাত্রীকে বাংলাদেশ নদীপ্রেমীদের জন্য এটি একটি অপরূপ ভ্রমনীয় স্থান।

পাবনা জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

তাড়াশ রাজবাড়ী (Tarash Rajbari)

তাড়াশ রাজবাড়ী পাবনার জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই অঞ্চলের সবচেয়ে পুরাতন ও ঐতিহ্যবাহী রাজবাড়ী। এটি বনমালী রায়বাহাদুরের তাড়াশ রাজবাড়ী নামেও পরিচিত। বগুড়া জেলার কোদলা গ্রামে তাড়াশের রায় বংশের পূর্বপুরুষ বাসুদেব নবাব মুর্শিদকুলি খানের রাজস্ব বিভাগে চাকরি করতেন। প্রায় ২০০টি মৌজার এষ্টেটে কারা তো এই জমিদার বাসুদেব তাড়াশ ভবন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এর আয়তাকার মূল ভবনের দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট এবং প্রস্থ ৬০ ফুট। বিভিন্ন সময়ে একটি নানান সরকারি দপ্তর হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। প্রতিবছরের দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন।

চাটমোহর শাহী মসজিদ (Chatmohar Shahi Mosque)

চাটমোহর শাহী মসজিদ পাবনা জেলা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে চাটমোহর উপজেলার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি প্রাচীন ও ঐতিহাসিক মসজিদ। মসজিদ থেকে প্রাপ্ত শিলালিপের তথ্য অনুসারে, ১৫৮১ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট আকবরের শাসনামলে এই মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদ নির্মাণে প্রাচীন সুলতানি স্থাপত্যের প্রভাব রয়েছে। এর দৈর্ঘ্য ৪৫ ফুট, প্রস্থ ২২ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং উচ্চতা ৪৫ ফুট। প্রায় ৪৫০ বছর পূর্বে নির্মিত এই মসজিদ দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের দর্শনার্থীরা এখানে ভিড় করেন।

গাজনার বিল (Ghazna Bill)

গাজনার বিল পাবনা জেলা শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে সজানগর উপজেলায় অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান। সুজানগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ছোট বড় ১৬টি বিল যুক্ত হয়ে প্রায় ৭ একর আয়তনের গাজনার বিল সৃষ্টি হয়েছে। বিলের প্রায় মাঝ দিয়ে নির্মিত হয়েছে একটি সরূপ পাকা রাস্তা। রাস্তার দুই পাশে রয়েছে দিগন্ত বিস্তৃত পানির রাজ্য। এখানে রয়েছে বাহারি রকমের মাছের স্বাদ, নানান প্রজাতির পাখিদের আনাগোনা, নৌকা ভ্রমণ উপভোগ করতে আসেন বহু দর্শনার্থী।

পাকশী রিসোর্ট (Pakshi Resort)

পাকশি রিসোর্ট পাবনার ঈশ্বরদীতে পদ্মা নদীর তীরে মনমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশের ৩৩ একর জায়গা নিয়ে গড়ে তোলা একটি রিসোর্ট। ৫ তারকা মানের আধুনিক স্থাপত্যশৈলী এবং নৈসর্গিক ল্যান্ডস্কেপে এই রিসোর্টটি তৈরি। এর চারদিক ঘিরে রেখেছে ফুলের বাগান, ফলের বাগান, নান্দনিক লেক, মিনি চিড়িয়াখানা, সুইমিংপুল, স্পা, মাল্টি কুজিন রেস্টুরেন্ট প্রায় চার শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির গাছ এবং বিভিন্ন ইনডোর গেমসের আয়োজন।

বগুড়া জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

ভীমের জাঙ্গাল (Bhima’s forest)

ভীমের জঙ্গল হলো প্রাচীন বা মধ্যযুগের প্রথম দিকে উত্তর বাংলার বরেন্দ্র অঞ্চলে নির্মিত একটি সড়ক ও বাঁধ। এটি দেশের উত্তর অঞ্চলের প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকা ও মহাস্থানগড়ের ৩ দিক দিয়ে পরিবেষ্টিত একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। প্রাচীনকালে বন্যাপ্লাবিত অঞ্চলের প্রতিরোধক সড়ক হিসেবে এটি ব্যবহার করা হতো। এই স্থাপনাটি নানান ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক।

খেরুয়া মসজিদ (Kherua Mosque)

খেরুয়া মসজিদ বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার খন্দকার টোলা এলাকায় অবস্থিত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। প্রায় ৪৩০ বছর পূর্বে সুলতানি ও মোঘল স্থাপত্যশৈলীর মিশেলে এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। চুন-সুরকির ব্যবহারে তৈরি এই মসজিদের লাল ইটের তৈরির দেওয়াল ১.৮১ চওড়া। মসজিদের দৈর্ঘ্য ১৭.২৭ মিটার এবং প্রস্থ ৭.৪২ মিটার। প্রাচীন কারুকার্য খচিত এই মসজিদটি দেখতে আসেন বিভিন্ন প্রান্তের দর্ষণার্থীরা।

মহাস্থানগড় (Mahasthangarh)

মহাস্থানগড় বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত প্রাচীন পুন্ড্রনগরীর ৪০০০ বছর পুরাতন স্থাপনাগুলোর একটি। ১৮০৮ সালে বুচানন হামিল্টন সর্বপ্রথম মহাস্থানগরের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেন এবং পরবর্তীতে ১৯৩১ সালে এই স্থানটিকে প্রাচীন পুন্ড্রনগরীর অংশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বরেন্দ্র অঞ্চল বগুড়া, দিনাজপুর, রংপুর, মালদহ, রাজশাহীতে পুনরোদের আদি বাসস্থান ছিল। 

গোকুল মেধ (Gokul Medha)

গোকুল মেধ বগুড়া জেলার মহাস্থানগড় থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দক্ষিনে গোকুল গ্রামে অবস্থিত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। স্থানীয়দের কাছে এটি বেহুলা-লক্ষিন্দরের বাসর ঘর হিসেবেও পরিচিত। এই ভবনটি গুপ্তযুগ অর্থাৎ ষষ্ঠ-সপ্তম শতকের কিছু পোড়ামাটির ফলক, সোনার পাত, বৈদ্যমঠ, চৌবাচ্চার ন্যায় দেখতে একটি গোসলের স্থান পাওয়া যায়।

বিহার ধাপ (Bihar dhap)

বিহার ধাপ বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় নাগর নদীর পাশ ঘেঁষে স্থাপিত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। ২৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২২০ মিটার প্রস্থের এই বিহার ধাপটি ভূমি থেকে প্রায় ২ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। এর চারপাশে রয়েছে ৩৭ টি ভিক্ষুক কক্ষ বিশিষ্ট উন্মুক্ত আঙ্গিনা এবং অন্যান্য স্থাপনা। ধারণা করা হয়, এটি দ্বিতীয় নির্মাণ যুগের একটি নিদর্শন এবং আনুমানিক ১১-১২ শতকের মধ্যে এই প্রশ্নস্থলের পতন ঘটে।

নাটোর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

হালতির বিল (Haltir Bill)

হালতির বিল নাটোর সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে নলডাঙ্গা থানার অন্তর্গত একটি সুপরিচিত বিনোদন কেন্দ্র। প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন প্রজাতির সুস্বাদু মাছের প্রজননস্থল হিসেবে বিখ্যাত এই বিলটি পিপরুল, খাজুরা, মাধনগর ও ব্রহ্মপুত্র ইউনিয়ন জুড়ে বিস্তৃত। বৈশাখ থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত বিলের আশেপাশের এলাকাগুলো যখন ৫-৮ ফুট পানির নিচে নিমজ্জিত থাকে, তখন ছোট ছোট গ্রামগুলো দেখতে দ্বীপের মতো মনে হয়। বিলের মাঝখান দিয়ে চলে গেছে একটি লম্বা রাস্তা। রাস্তার দুপাশে বিল, নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য, নৌকা ভ্রমণ, উত্তাল ঢেউয়ের প্রবাহমান জলরাশি ও দমকা হাওয়ার সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছর বহু পর্যটকদের আগমন ঘটে এখানে।

চলন বিল (Challan Bill)

চলন বিল বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বিল। এটি নাটোর, সিরাজগঞ্জ এবং পাবনা জেলা জুড়ে বিস্তৃত ছোট ছোট অনেকগুলো বিলের সমষ্টি নিয়ে তৈরি। বর্ষাকালে এখানে ৩৬৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে পানিতে একাকার হয়ে যায়। এবং আশেপাশের সকল ছোট বড় বিলের সংমিশ্রণে জ্বলন বিলের মোট আয়তন হয় ১১৫০ থেকে ১৪২৪ বর্গ কিলোমিটার পর্যন্ত। এই বিলের উপরে সুনীল আকাশ, বর্ষায় দ্বীপের মতো ভাসমান সবুজ গ্রাম, শীতের অতিথি পাখির কলরব, শরতে বিলের পাড় ধরে ফুটে থাকা কাশবনের সৌন্দর্য প্রতিবছর অসংখ্য দর্শনার্থীদের মনোমুগ্ধ করে রাখে। 

উত্তরা গণভবন (Uttara Ganabhavan)

উত্তরা গণভবন মূলত নাটোরের রানী ভবানী তার নায়েব দয়ারাম রায়কে উপহার দেওয়া  বিখ্যাত দিঘাপতিয়া রাজবাড়ী ছিল। বর্তমানে প্রায় ৪৩ একর আয়তনের লেক ও প্রাচীর বেষ্টিত এবং ১২টি ভবন বিশিষ্ট রাজবাড়ীটি বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গে দেশের প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় কার্যালয় বা উত্তরা গণভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই রাজপ্রাসাদের প্রাঙ্গনে ইতালি থেকে সংগ্রহীত ভাস্কর্যের সুসজ্জিত বাগান রয়েছে। মনোমুগ্ধকর সেই বাগানে স্থান পেয়েছে ৪টি কামান, অতিথিশালা, তফশিল অফিসসহ রাজ-অশোক, যষ্টিমধু, হৈমন্তী, পিয়ালী, সেঁউতি তারাঝরা, সাইকাস, মাধবী, বনপুলক, কর্পূর, পারিজাত, সৌরভী ইত্যাদি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।

গ্রীন ভ্যালী পার্ক (Green Valley Park)

গ্রীন ভ্যালী পার্ক নাটোর জেলার লালপুর উপজেলা সদর থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি চমৎকার বিনোদন কেন্দ্র। প্রায় ১২৩ বিঘা জায়গার উপর নির্মিত এই পার্কে রয়েছে বুলেট ট্রেন, মেরিগো রাউন্ড, মিনি ট্রেন, হানি সুইং, পাইরেট শীপ, নাগরদোলা, স্পিডবোড, প্যাডেল বোড ইত্যাদি বিভিন্ন রাইড। এছাড়াও রয়েছে প্রায় ৩০ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত একটি নয়নাভিরাম লেক। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থার আওতায় থাকা এই পার্কটিতে রয়েছে শুটিং স্পট, পিকনিক স্পট, অ্যাডভেঞ্চার রাইডস সহ নানারকম বিনোদনমূলক সুযোগ-সুবিধা।

জয়পুরহাট জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

নান্দাইল দিঘী Nandail Dighi)

নান্দাইল দিঘী হলো জয়পুরহাট শহর থেকে ১৯ কিলোমিটার পূর্বে কালাই উপজেলার নান্দাইল গ্রামে অবস্থিত জেলার সবচেয়ে বড় এবং ঐতিহাসিক দিঘী। এটি প্রায় ৫৯.৪ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। ধারণা করা হয়, ১৬১০ সালে মৌর্য্য বংশের সম্রাট নন্দলাল শুকনো মৌসুমে চাষাবাদের সুবিধা এবং খাবার পানির অভাব পূরণের উদ্দেশ্যে এই দিঘী খনন করেছিলেন। বর্তমানে এই দীঘির পাড়ে স্থাপিত হয়েছে নান্দাইল কলেজ। শীতকালে বহু অতিথি পাখির আগমন হয় এখানে। ফলে এটি অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত একটি পিকনিক স্পটে পরিণত হয়েছে।

হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ (Hinda-Kasba Shahi Jame Masjid)

হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ জয়পুরহাট জেলা শহর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে ক্ষেতলালের হিন্দা গ্রামে অবস্থিত বাংলাদেশের ইসলামী স্থাপত্য শিল্পের একটি অন্যতম নিদর্শন। মোগল স্থাপত্য শিল্পের অনুকরণে কাচ, চিনামাটি এবং মোজাইকের মাধ্যমে মসজিদের নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এর কক্ষের দৈর্ঘ্য ৪৯.৫০ ফুট এবং প্রস্থ ২২.৫০ ফুট। মসজিদে পাঁচটি গম্বুজ রয়েছে এবং মসজিদের উত্তর দিকে রয়েছে ৪০ ফুট উচ্চতার একটি মিনার। প্রতিবছর এখানে বহু দর্শনার্থীদের আগমন হয়।

শিশু উদ্যান ও রিসোর্ট (Children’s Park and Resort)

জয়পুর জেলা শহর থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে বুলু পাড়ায় জয়পুর রিসোর্ট এর পাশাপাশি গড়ে তোলা হয়েছে একটি শিশু উদ্যান। সকল বয়সী মানুষকে নির্মল প্রাকৃতিক বিনোদন দেওয়ার উদ্দেশ্যে ২০০৫ সালে রফিকুল ইসলাম চৌধুরী (প্রিন্স) সাইট বিঘা জমির উপর এই শিশু পার্কটি প্রতিষ্ঠা করেন। বিনোদনের জন্য এখানে রয়েছে নাগরদোলা, টয় ট্রেন, দোলনা, সুইমিং পুল, থ্রিডি মুভি, প্যাডেল বোট, মিনি চিড়িয়াখানা, চরকি আকর্ষণীয় রাইড এবং ফুডকোর্ট। এছাড়াও চারিদিকে সবুজে ঘেরা পরিবেশের পিকনিক ও শুটিং স্পটের পাশাপাশি রয়েছেন নানান বন্যপ্রানী, আম বাগান ও বিভিন্ন ভাস্কর্য।

আছরাঙ্গা দীঘি (Acharanga Dighi)

আছরাঙ্গা দীঘি জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নে অবস্থিত একটি প্রাচীন সভ্যতার ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন। স্থানীয়দের মতে, রাজশাহী জেলার তাহিরপুরের আদি রাজবংশের জমিদার মৌন ভট্টের আমলে বৃষ্টিপাত কম হয়েছিল। তখন কৃষি জমিগুলোকে চাষের উপযোগী করার লক্ষ্যে নবম শতকের মাঝামাঝি সময়ে এই দিকেটি খনন করেন। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১০০০ ফুট এবং প্রস্থ ১০৭০ ফুট। শীতকালীন সময়ে এখানে বিভিন্ন ধরনের অতিথি পাখির কলকাটুলিতে মুখরিত হয়ে দিঘির মনমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন বহু দর্শনার্থী।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

রহনপুর নওদা বুরুজ (Rahanpur Naoda Burj)

রহনপুর নওদা বুরুজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুরে অবস্থিত একটি প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থান। দূর থেকে এই অট্টালিকাটি দেখতে অনেকটা মাটির উঁচু ঢিবির মতো। ধারণা করা হয়, রাজা লক্ষণ সেনের আমলে রহনপুর বাণিজ্যিক নগরীতে সুরম্য অট্টালিকাসহ অসংখ্য স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছিল। তার মধ্যে এটি একটি। দূর দূরান্ত থেকে বহু দর্শনার্থীরা প্রাচীন ঐতিহ্য ও ইতিহাসের খোঁজে এই স্থাপনাটি দেখতে আসেন।

ছোট সোনা মসজিদ (Chuto Shona Mosque)

ছোট সোনা মসজিদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নে সুলতানি স্থাপত্যের রত্ন হিসেবে আখ্যায়িত ঐতিহাসিক মসজিদ। আনুমানিক, ১৪৯৩-১৫১৯ সালের মধ্যে সুলতান হোসেন সাহার শাসনকালে জনৈক মনসুর ওয়ালী মোহাম্মদ বিন আলী- ছোট সোনা মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। সুলতানি স্থাপত্যশৈলীর এই মসজিদে ব্যবহৃত হয়েছে গ্রানাইটের টালি। এর দেওয়ালগুলো প্রায় ৬ ফুট চওড়া। মসজিদের রয়েছে ১২ টি গম্বুজ ও ৪টি আট কোনা মিনার। প্রচলিত আছে একসময় মসজিদের গম্বুজ গুলো সোনা দিয়ে মোড়ানো ছিল। 

আলপনা গ্রাম টিকইল (Alpana Village Tikoil)

বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার ছোট একটি গ্রামের নাম টিকইল। এই গ্রামের প্রায় প্রতিটি দেয়াল যেন উন্মুক্ত ক্যানভাস, যেখানে গ্রামের মানুষেরা ফুটিয়ে তোলেন নান্দনিক সব আলপনা। তাই বর্তমানে এটি আলপনা গ্রাম নামেই বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছে। বছরের পর বছর ধরে বংশ-পরম্পরায় গ্রামের গৃহিণী ও মেয়েরা দেয়ালে দেয়ালে তাদের ঐতিহ্যকে লালন করছে আলপনার মাধ্যমে। মাটির তৈরি দেয়ালগুলোতে রং দিয়ে আলপনা আঁকার প্রধান কাঁচামাল আসে মাটি থেকেই। অংকনের পর আলপনা গুলো প্রায় এক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

তোহখানা (Tohkhana)

তোহখানা কমপ্লেক্স চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী মোঘল স্থাপত্য। তোহখানা অর্থ ঠান্ডা ভবন। ঐতিহাসিক তথ্য মতে ১৬৪৯-১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দে মুঘল সম্রাট শাহজাহানের পুত্র সুলতান শাহ সুজা তার মুর্শিদ সৈয়দ নেয়ামতউল্লাহর শীতকালীন বসবাসের সুবিধার্থে ৩তলা বিশিষ্ট এই তাপনিয়ন্ত্রিত প্রাসাদ নির্মাণ করেছিলেন। প্রাসাদের পাশাপাশি এখানে রয়েছে ৩ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ, কূপ এবং এক গম্বুজ বিশিষ্ট সমাধি।

নওগাঁ জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

আলতাদীঘি (Altadighi)

আলতাদিঘী, নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলা সদর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানের শালবন এবং লাল মাটির পাহাড়ি এলাকার মতো বনের উচ্চ নিচু রাস্তার পাশে রয়েছে প্রায় ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ৪০০ মিটার প্রস্থের এই প্রাচীন দিঘী। এই অপরূপ সৌন্দর্যের আলতাদীঘিতে রয়েছে প্রায় ৫৫ প্রজাতির দেশীয় মাছ এবং ১৪,০০০ প্রজাতির বিভিন্ন জলজ প্রাণীর বসবাস।

ডানা পার্ক (Dana Park)

ডানা পার্ক নওগাঁ জেলা শহরের ভবানীপুর গ্রামে প্রায় ১০ বিঘা জায়গা জুড়ে গড়ে তোলা একটি বিনোদনকেন্দ্র। এখানে রয়েছে বহু আকর্ষণীয় রাইড, ঘোড়ায় চলার সুযোগ, শিশুকর্ণার, সুইমিং পুল, কটেজ, রেস্টুরেন্ট, কমিউনিটি সেন্টার, পিকনিক স্পট এবং হাতি, জিরাফ, বাঘ, হরিণ, ক্যাঙ্গারু, ঘোড়া, বক ইত্যাদি প্রাণীর ভাস্কর্য। গ্রাম বাংলার প্রাকৃতিক দৃশ্যের পাশাপাশি এই পার্কটি সকলের জন্যই উপযুক্ত বিনোদন কেন্দ্র।

আরো পড়ুন: চট্টগ্রাম বিভাগের সকল জেলার ৫০টি দর্শনীয় স্থান

কুসুম্বা মসজিদ (Kusumba Mosque)

কুসুম্বা মসজিদ নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার ৮ নং কুসুম্বা ইউনিয়নের কুসুম্বা গ্রামে অবস্থিত প্রায় ৪৫০ বছর পুরনো একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। ধারণা করা হয়, গিয়াসউদ্দিন বাহাদুর শাহের আমলে আনুমানিক ১৫৫৮ খ্রিস্টাব্দে এটি নির্মিত হয়েছিল। এটি নওগাঁ জেলার ইতিহাস মুসলিম সুলতানি স্থাপত্যশৈলের অনবদ্ধ নিদর্শন। বাংলাদেশের ৫ টাকার নোটে এই মসজিদের ছবি মুদ্রিত রয়েছে।

শেষকথা

উপরোক্ত রাজশাহী বিভাগের সকল জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ ছাড়াও এই বিভাগে আরো বহু দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তবে ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে এগুলোই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।

About Durud Ahmed

সম্মানিত ভিজিটর আমি দুরুদ আহমেদ,পেশায় আমি একজন ব্লগ লেখক। প্রযুক্তি ও শিক্ষা, ইতিহাস-ঐতিহ্য, লাইফস্টাইল এবং ইসলামিক লেখাই আমার প্রিয়। এই ব্লগের মাধ্যমে আমি সঠিক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে ভিজিটরদের সহযোগিতা করাই মূল লক্ষ্য।